সূরা হুদ। রুকু ৯ । হযরত মূসা (আঃ) ও ফিরাউন।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।
রুকু ৯ । আয়াত ৯৬ -১০৯।
হযরত মূসা (আঃ) ও ফিরাউন।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(৯৬) আমি তো মূসাকে আমার নিদর্শনাবলী ও স্পষ্ট প্রমাণসহ পাঠাইয়াছিলঅম।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(৯৭) ফিরআউন ও তাহার প্রধানদের নিকট। কিন্তু তাারা ফিরআউনের কার্যকলাপের অনুসরণ করিত এবং ফিরআউনের কার্যকলাপ ভাল ছিল না।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(৯৮) সে কিয়ামতের দিন তাহার সম্প্রদায়ের অগ্রভাগে থাকিবে এবং সে উহাদেরকে লইয়া দোজখে প্রবেশ করিবে। যেখানে প্রবেশ করানো হইবে তাহা কত নিকৃষ্ট স্থান।
---------------------------------------------------------------------------------------------
মহান আল্লাহ মূসা (আঃ)কে নবী হিসাবে ফিরাউনের কাছে পাঠিয়েছিলেন।
আল্লাহ তাঁকে সুস্পষ্ট নিদর্শণ (মোজেযা) দিয়েছিলেন।
ফিরউন কুফর করত এবং তার প্রধানরা (সভাসদরা) সেটাই অনুসরণ করত।
তারা মূসা (আঃ) এর কথা বিশ্বাস করে নি এবং ঈমানও আনে নি।
তারা পথভ্রষ্ট ছিল এবং সেই পথেই চলত।
কিয়ামতের দিন দেখা যাবে ফিরউন তার সম্প্রদায়ের (পথভ্রষ্ট) প্রথমে থাকবে।
তাদেরকে দোজখে নিক্ষেপ করা হবে।
দোজখ বাসন্থান হিসাবে অত্যন্ত কিৃষ্ট জায়গা।
৯৯ থেকে ১০২ নং আয়াত: অভিশপ্ত জাতি ।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(৯৯) এই দুনিয়ায় উহাদেরকে করা হইয়াছিল অভিশাপগ্রস্ত এবং অভিশাপগ্রস্ত হইবে উহারা কিয়ামতের দিনেও । কত নিকৃষ্ট সে পুরষ্কার যাহা তাহাদেরকে দেওয়া হইবে।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০০) ইহা জনপদসমূহের কতক সংবাদ যাহা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করিতেছি। উহাদের মধ্যে কতক এখনও বিদ্যমান এবং কতক নির্মূল হইয়াছে।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০১) আমি উহাদের প্রতি জুলুম করি নাই কিন্তু উহারাই নিজেদের প্রতি জুলুম করিয়াছিল। যখন তোমার প্রতিপালকের বিধান আসিল তখন আল্লাহ ব্যতীত যে ইলাহসমূহের তাহারা ইবাদত করিত তাহারা উহাদের কোন কাজে আসিল না। তাহারা ধ্বংস ব্যতীত উহাদের জন্য কিছু বৃদ্ধি করিল না।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০২) এই রূপই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি। তিনি শাস্তি দান করেন জনপদসমূহকে যখন উহারা জুলুম করিয়া থাকে। নিশ্চয়ই তাঁহার শাস্তি মর্মন্তুদ, কঠিন।
---------------------------------------------------------------------------------------------
ফেরউন ও তার অনুসারীরা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত জাতি।
যে প্রতিফল তাদের দেয়া হবে তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট মানের।
এই সূরাতে এতক্ষণ ধরে যে সব জনপদের কথা মহান আল্লাহ বর্ণনা করেছেন তার কথা উল্লেখ করেছেন।
এর মধ্যে কতক জনপদ নির্মূল হয়ে গেছে আবার কতক জনপদ এখনো আছে।
মহান আল্লাহ তাদের উপর জুলুম করে নি।
তারা নিজেরাই তাদের নিজেদের উপর জুলুম করেছে।
যখন আল্লাহর বিধান আসে তার পর তারা যাদের উপাসনা করত তারা কোন কাজে আসল না।
আল্লাহর শাস্তিতে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হল।
মহান আল্লাহ এইভাবে সীমালংঘনকারী জাতিকে ধ্বংস করেন।
তাদেরকে অত্যন্ত মর্মান্তিক ও কঠিন শাস্তি দেন।
১০৩ থেকে ১০৭ নং আয়াত: কিয়ামত দিবসের কিছু চিত্র।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৩) যে আখিরাতের শাস্তিকে ভয় করে ইহাতে তো তাহার জন্য নিদর্শন আছে। ইহা সেই দিন, যেদিন সমস্ত মানুষকে একত্র করা হইবে; ইহা সেই দিন যেদিন সকলকে উপস্থিত করা হইবে;;
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৪) এবং আমি কিছুকালের জন্য উহা স্থগিত রাখি মাত্র।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৫) যখন সেদিন আসিবে তখন আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কেহ কথা বলিতে পারিবে না; উহাদের মধ্যে কেহ হইবে হতভাগ্য আর কেহ ভাগ্যবান।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৬) অতঃপর যাহারা হতভাগ্য তাহারা থাকিবে দোজখে এবং সেখানে তাহাদের জন্য থাকিবে চিৎকার ও আর্তনাদ।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৭) সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে যত দিন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাই করেন যাহা তিনি ইচ্ছা করেন।
---------------------------------------------------------------------------------------------
এই সূরাতে সত্যপ্রত্যখ্যানকারীদের ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ যে সব কাহিনীর বিবরণ দিয়েছেন , তাতে যারা বিশ্বাসী এবং আল্লাহভীরু - তাদের জন্য বিশেষ শিক্ষা আছে।
যেমন - প্রথমত তারা এসব কাহিনী পড়ে আখেরাতের প্রতি গুরুত্ব দিবে এবং পারলৌকিক জীবনের কল্যাণ কামনা করবে।
তারা বিভিন্ন নবী ও তার সম্প্রদায়ের বিনাশ হবার কাহিনী থেকে আখিরাতে কি কি শাস্তি হতে পারে তার নিদর্শনগুলো বুঝতে পারবে।
যখন বুঝতে পারবে তখন সত্য প্রত্যখ্যানকারীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে উৎসাহিত হবে।
কারণ তারা আল্লাহকে ভয় পাবে।
আখেরাতের সে দিনের কথা বলা হয়েছে যেদিন সবাইকে হাশরের ময়দানে একত্র করা হবে।
যেদিন প্রত্যেকের পাপ-পূণ্যের বিচার হবে এবং শাস্তি ও পুরস্কার দেয়া হবে।
আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, তিনি অধিকাংশ সময় শাস্তি দেরী করে দেন। তাড়াহুড়ো করেন না। কিন্তু তিনি ছেড়ে দেন না।
বিচারের দিন মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়বে। তার অনুমতি ছাড়া কেউ কথা বলতে পারবে না।
আল্লাহ যদি অনুমতি দেন তবে কথা বলতে পারবে।
১০৮ ও ১০৯ নং আয়াত: স্থায়ী বাসস্থান।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৮) পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
---------------------------------------------------------------------------------------------
(১০৯) সুতরাং উহারা যাহাদের 'ইবাদত করে তাহাদের সম্বন্ধে সংশয়ে থাকিও না, পূর্বে উহাদের পিতৃপুরুষেরা যাহাদের 'ইবাদত করিত উহারা তাহাদেরই 'ইবাদত করে। অবশ্যই আমি উহাদেরকে উহাদের প্রাপ্য পুরাপুরি দিব-কিছুমাত্র কম করিব না।
---------------------------------------------------------------------------------------------
যারা ভাগ্যবান তারা থাকবে জান্নাতে। যেখানে তারা সব সময় সুখ ও শান্তি ভোগ করবে।
বেহেশতের সুখ এবং পৃথিবীর সুখের মধ্যে পার্থক্য আছে। বেহেশতের সুখ হচ্ছে একটানা, অপ্রতিহত এবং অব্যাহত। কিন্তু পৃথিবীর সুখ স্থায়ী নয়। তা নির্ভর করে আমাদের অভিজ্ঞতার উপর । আলোর ঝলকানির মত আসে আবার যায়।
জান্নাতের সুখ হচ্ছে নিরবিচ্ছিন্ন।
যারা আল্লাহর ইবাদত করে তাদের জন্য এই সুখের ব্যাপারে কোন সংশয় নাই।
আল্লাহ প্রত্যেককে যার যার কর্ম অনুযায়ী প্রতিদান দিবেন।
অনুধাবন:
যারা আল্লাহদ্রোহী, সীমালংঘনকারীও অত্যাচারী - মহান আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেন।
এই পৃথিবীতে ফিরাউন পথভ্রষ্টতার নেতা হিসাবে যেমন অগ্রগামী ছিল তেমনি আখেরাতেও তাই থাকবে।
সত্যপথ অবলম্বনকারীদের জন্য আখেরাতে্া আছে নিরাচ্ছিন্ন পুরস্কার। অর্থ্যাত্ তারা জান্নাত পাবে।
(ক) সত্যপ্রত্যখ্যানকারীদের ইহলৌকিক এবং পারলৌকিক পরিণাম:
ফেরউন ও তার অনুসারীরা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত জাতি।
যে প্রতিফল তাদের দেয়া হবে তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট মানের।
এই সূরাতে এতক্ষণ ধরে যে সব জনপদের কথা মহান আল্লাহ বর্ণনা করেছেন তার কথা উল্লেখ করে বলছেন -
এর মধ্যে কতক জনপদ নির্মূল হয়ে গেছে আবার কতক জনপদ এখনো আছে।
মহান আল্লাহ তাদের উপর জুলুম করে নি।
তারা নিজেরাই তাদের নিজেদের উপর জুলুম করেছে।
যখন আল্লাহর বিধান আসল তাদের উপর তখন তারা যাদের উপাসনা করত তারা কোন কাজে আসল না।
আল্লাহর শাস্তিতে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হল।
মহান আল্লাহ এইভাবে সীমালংঘনকারী জাতিকে ধ্বংস করেন।
তাদেরকে অত্যন্ত মর্মান্তিক ও কঠিন শাস্তি দেন।
(খ) কাহিনীসমূহ থেকে শিক্ষা:
এই সূরাতে সত্যপ্রত্যখ্যানকারীদের ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ যে সব কাহিনীর বিবরণ দিয়েছেন , তাতে যারা বিশ্বাসী এবং আল্লাহভীরু - তাদের জন্য বিশেষ শিক্ষা আছে।
যেমন - প্রথমত তারা এসব কাহিনী পড়ে আখেরাতের প্রতি গুরুত্ব দিবে এবং পারলৌকিক জীবনের কল্যাণ কামনা করবে।
তারা বিভিন্ন নবী ও তার সম্প্রদায়ের বিনাশ হবার কাহিনী থেকে আখিরাতে কি কি শাস্তি হতে পারে তার নিদর্শনগুলো বুঝতে পারবে।
যখন বুঝতে পারবে তখন সত্য প্রত্যখ্যানকারীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে উত্সাহিত হবে।
কারণ তারা আল্লাহকে ভয় পাবে।
আখেরাতের সে দিনের কথা বলা হয়েছে যেদিন সবাইকে হাশরের ময়দানে একত্র করা হবে।
যেদিন প্রত্যেকের পাপ-পূণ্যের বিচার হবে এবং শাস্তি ও পুরস্কার দেয়া হবে।
আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, তিনি অধিকাংশ সময় শাস্তি দেরী করে দেন। তাড়াহুড়ো করেন না। কিন্তু তিনি ছেড়ে দেন না।
বিচারের দিন মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়বে। তার অনুমতি ছাড়া কেউ কথা বলতে পারবে না।
আল্লাহ যদি অনুমতি দেন তবে কথা বলতে পারবে।