সূরা হুদ। রুকু ৪। হযরত নূহ (আঃ) ও মহাপ্লাবন।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
সূরা হুদ। রুকু ৪
আয়াত ৩৬ - ৪৯।
হযরত নূহ (আঃ) ও মহাপ্লাবন।
৩৬ ও ৩৭ নং আযাত:
-------------------------------------------------------------------------
(৩৬) নূহের প্রতি প্রত্যাদেশ হইয়াছিল, 'যাহারা ঈমান আনিয়াছেতাহারা ব্যতীত তোমার সম্প্রদায়ের অন্য কেহ কখনও ঈমান আনিবে না। সুতরাং তাহারা যাহা করে তজ্জন্য তুমি দুঃখিত হইও না।
-------------------------------------------------------------------------
(৩৭) 'তুমি আমার তত্ত্বাবধনে ও আমার প্রত্যাদেশ অনুযায়ী নৌকা নির্মাণকর এবং যাহারা সীমা লংঘন করিয়াছে তাহাদের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলিও না, তাহারা তো নিমজ্জিত হইবে।
-------------------------------------------------------------------------
শিক্ষণীয়:
নূহ (আঃ) শতাব্দী পর শতাব্দী ধরে এক আল্লাহর উপাসনা করতে বললেও কিছু রোক তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়। আল্লাহ অবিশ্বাসীদের ঐশী শাস্তি দিতে মনস্থ করেন এবং নূহ (আঃ) কে মুমিনদের রক্ষার জন্য নৌকা তৈরী করতে বলেন।
পাপ ও সত্য প্রত্যখ্যানের কারণে যখন শাস্তি অনিবার্য হয়ে পড়ে তখন নূহ (আঃকে কাফিরদের জন্য দোয়া করতে নিষেধ করেন।
৩৮ ও ৩৯ আয়াত:
-------------------------------------------------------------------------
(৩৮) সে নৌকা নির্মাণ করিতে লাগিল এবং যখনই তাহার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা তাহার নিকট দিয়া যাইত, তাহাে উপহাস করিত; সে বলিত, 'তোমরা যদি আমাকে উপহাস কর তবে আমরাও তোমাদের উপহাস করিব, যেমন তোমরা উপহাস করিতেছ;
-------------------------------------------------------------------------
(৩৯) এবং তোমরা অচিরে জানিতে পারিবে-কাহার উপর আসিবে লাঝ্ছনাদায়ক শাস্তি আর তাহার উপর আপতিত হইবে স্থায়ী শাস্তি।'
-------------------------------------------------------------------------
শিক্ষণীয়:
নূহ (আঃ) এর নৌকা তৈরী দেখে কওমের লোকেরা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে। তিনি হতাশ হয়ে শাস্তি কামনা করেন। তাদেরকে সতর্ক করেন চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগের জন্য।
প্লাবনের শুরু (৪০ -৪৩)
-------------------------------------------------------------------------
(৪০) অবশেষে যখন আমার আদেশ আসিল এবং উনুন উথলিয়া উঠিল; আমি বলিলাম, 'ইহাতে উঠাইয়া নাও প্রত্যেক শ্রেণীল যুগলের দুইুট, যাহাদের বিরুদ্ধে পূর্ব-সিদ্ধান্ত হইয়াছে তাহারা ব্যতীত তোমার পরিবার -পরিজনকে এবং যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহাদেরকে।' তাহার সঙ্গে ঈমান আনিয়াছিল অল্প কয়েকজন।
-------------------------------------------------------------------------
(৪১) সে বলিল, 'ইহাতে আরোহণ কর, আল্লাহর নামে ইহার গতি ও স্থিতি, আমার প্রতিপালক অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। '
-------------------------------------------------------------------------
(৪২) পর্বত-প্রমাণ তরঙ্গের মধ্যে ইহা তাহাদেরকে লইয়া বহিয়া চলিল; নূহ তাহার পুত্রকে - যে পৃথক ছিল, আহ্বান করিয়া বলিল, 'হে আমার পুত্র! আমাদের সঙ্গে আরোহণ কর এবং কাফিরদের সঙ্গী হইও না।'
-------------------------------------------------------------------------
(৪৩) সে বলিল, 'আমি এমন এক পর্বতে আশ্রয় লইব যাহা আমাকে প্লাবন হইতে রক্ষা করিবে।' সে বলিল, 'আজ আল্লাহর হুকুম হইতে রক্ষা করিবার কেহ নাই, তবে যাহাকে আল্লাহ দয়া করিবেন সে ব্যতীত।, ইহার পর তরঙ্গ উহাদেরকে বিচ্ছিন্ন করিয়া দিল এবং সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভর্ক্ত হইল।
-------------------------------------------------------------------------
নৌকা নির্মাণ শেষে পানি ওঠা শুরু হয়। তাঁর স্ত্রী - পুত্র নৌকায় উঠেনি। যারা ইমান এনেছে তারা শুধু উঠেছে।ধর্মীয় বন্ধন পারিবারিক বন্ধনের চেয়ে বড়।
পিতৃস্নেহ এবং পিতার দায়িত্ব ও কর্তব্যর কারণে তিনি তার সন্তানকে নৌকায় উঠতে বলেন ।
অসত্ সঙ্গ নবী পুত্রকে পথভ্রষ্ট করতে পারে।
প্লাবনের অবসান (৪৪ )
আল্লাহর শাস্তির একটি উদাহরণ এই মহাপ্লাবন।
-------------------------------------------------------------------------
(৪৪) ইহার পর বলা হইল, 'হে পৃথিবী! তুমি তোমার পানি গ্রাস করিয়া নাও এবং হে আকাশ! ক্ষান্ত হও।' ইহার পর বন্যা প্রশমিত হইল এবং কার্য সমাপ্ত হইল, নৌকা জুদী পর্বতের উপর স্থির হইল এবং বলা হইল, জালিম সম্প্রদায় ধ্বংস হউক।
-------------------------------------------------------------------------
শিক্ষণীয়:
নূহ (আঃ) কাহিনী থেকে প্রধান শিক্ষা অন্যায়, পাপাচার এবং সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনেক ক্ষেত্রে মানুষের পাপের পরিণতি।
নূহ (আঃ) এর দোয়া ও আল্লাহর উত্তর (৪৫ -৪৮)
-------------------------------------------------------------------------
(৪৫) বূহ তাহার প্রতিপালককে সম্বোধন করিয়া বলিল, 'হে আমার প্রতিপালক! আমার পূত্র আমার পরিবারভূক্ত এবং আপনার প্রতিশ্রুতি সত্য; আর আপনি তো বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক।'’
-------------------------------------------------------------------------
(৪৬) তিনি বলিলেন,'হে নূহ! সে তো তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসত্কর্মপরায়ণ। সুতরাং যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই সে বিষয়ে আমাকে অনুরোধ করিও না। আমি তোমাকে উপদেশ দিতেছি, তুমি যেন অজ্ঞদের অন্তর্ভর্ক্ত না হও।'
-------------------------------------------------------------------------
(৪৭) সে ইলল, 'হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে যাহাতে আপনাকে অনুরোধ না করি, এইজন্য আমি আপনার শরণ লইতেছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন এবং দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হইব।
-------------------------------------------------------------------------
(৪৮) বলা হইল, 'হে নূহ! অবতরণ কর আমার পক্ষ হইতে শান্তি ও কল্যাণসহ এবং তোমার প্রতি ও যে সমস্ত সম্প্রদায় তোমার সঙ্গে আছে তাহাদের প্রতি; অপর সম্প্রদায়সমূহকে আমি জীবন উপভোগ করিতে দিব, পরে আমাে হইতে মর্মন্তুদ শাস্তি উহাদেরকে স্পর্শ করিবে;
-------------------------------------------------------------------------
যে বিষয়ে আমরা অবহিত নই সে বিষয়ে আমাদের চাওয়া উচিত নয়।
দোয়া কবুল না হলে মনক্ষুন্ন হবার কারণ নেই।
অনুচিত দোয়ার জন্য ক্ষমা ও দয়া প্রার্থনা করতে হবে।
ঘটনার পরিশিষ্ট ও ফায়দা।(৪৯)
-------------------------------------------------------------------------
(৪৯) 'এই সমস্ত অদৃশ্যলোকের সংবাদ আমি তোমাকে ওহী দ্বারা অবহিত করিতেছি, যাহা ইহার পূর্বে তুমি জানিত না। সুতরাং ধৈর্য ধারণ কর, শুভ পরিণাম মুত্তাকীদেরই জন্য।
-------------------------------------------------------------------------
এই আয়াতে নূহ ও তাঁর কওমের বর্ণনা শেষ হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে এ ঘটনা আপনার উম্মতদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। মুমিনদের বিজয় অবধারিত কিন্তু এ জন্য প্রয়োজন ধের্যধারণ এবং
সূরা হুদ- রুকু ৩ ও ৪।
আয়াত ২৫ - ৩৫
শিরোনাম: হযরত নূহ (আঃ) ।
মূল আলোচ্য বিষয় ২টি।
১. হযরত নূহ (আঃ) এর কওম ।
২ . মহাপ্লাবন।
১. হযরত নূহ (আঃ) এর কওম ।
(ক) হযরত নূহ (আঃ) এর মাধ্যমে তাঁর কওমকে তওহীদের আমন্ত্রণ এবং যন্ত্রণাময় শাস্তির বার্তা দেয়া হয়েছে।(২৫, ২৬)
(খ) সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বিরোধিতা সত্বেও নূহ (আঃ) বিনয়ের সাথে নবুয়্যতের সুস্পষ্ট প্রমাণ দান।(২৭,২৮)
(গ) হযরত নূহ () এর বৈশিষ্ট্য
তিনি আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি, ওহী পাঠান, পারিশ্রমিক নেই,ধনভান্ডার নেই, দুর্বল ও দরিদ্র ব্যক্তিদের মর্যাদা দেন, ভবিষ্যত্ জানেন না, যুক্তিপূর্ণ কথা বলেন, অহেতু বিতর্ক করেন না এবং তাঁর কাছে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা মূর্খ সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী । (২৯,৩০, ৩১, ৩২)
(ঘ) ঐশী শাস্তির বৈশিষ্ট্য:
আল্লাহর হাতে এবং কেউ ব্যর্থ করতে পারবে না।৩৩ ,৩৪)
(ঙ) নূহ (আঃ) এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার যে তিনি যা বলছেন তা আল্লাহর বাণী নয়। সত্য প্রত্যখ্যানের জন্য কাফিররা দায়ী থাকবে। (৩৫)
২ . হযরত নূহ (আঃ) ও মহাপ্লাবন। (৩৬ -৪৩)
আল্লাহ অবিশ্বাসীদের ঐশী শাস্তি দিতে মনস্থ করেন এবং নূহ (আঃ) কে মুমিনদের রক্ষার জন্য নৌকা তৈরী করতে বলেন।
পাপ ও সত্য প্রত্যখ্যানের কারণে যখন শাস্তি অনিবার্য হয়ে পড়ে তখন নূহ (আঃ)কে কাফিরদের জন্য দোয়া করতে নিষেধ করেন। (৩৬,৩৭)
নৌকা তৈরী দেখে কওমের লোকেরা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে। তিনি হতাশ হয়ে শাস্তি কামনা করেন। তাদেরকে সতর্ক করেন চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগের জন্য।
নৌকা নির্মাণ শেষে পানি ওঠা শুরু হয়। তাঁর স্ত্রী - পুত্র নৌকায় উঠেনি। যারা ইমান এনেছে তারা শুধু উঠেছে।দেখা যায় ধর্মীয় বন্ধন পারিবারিক বন্ধনের চেয়ে বড়।
পিতৃস্নেহ এবং পিতার দায়িত্ব ও কর্তব্যর কারণে তিনি তার সন্তানকে নৌকায় উঠতে বলেন ।
অসত্ সঙ্গ নবী পুত্রকে পথভ্রষ্ট করতে পারে।
অনুধাবন:
আল্লাহর শাস্তির একটি উদাহরণ এই মহাপ্লাবন।
নূহ (আঃ) কাহিনী থেকে প্রধান শিক্ষা অন্যায়, পাপাচার এবং সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনেক ক্ষেত্রে মানুষের পাপের পরিণতি।
নূহ (আঃ) এর দোয়া ও আল্লাহর উত্তর (৪৫ -৪৮)
যে বিষয়ে আমরা অবহিত নই সে বিষয়ে আমাদের চাওয়া উচিত নয়।
দোয়া কবুল না হলে মনক্ষুন্ন হবার কারণ নেই।
অনুচিত দোয়ার জন্য ক্ষমা ও দয়া প্রার্থনা করতে হবে।
ঘটনার পরিশিষ্ট ও ফায়দা।(৪৯)
এই আয়াতে নূহ ও তাঁর কওমের বর্ণনা শেষ হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে এ ঘটনা আপনার উম্মতদের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। মুমিনদের বিজয় অবধারিত কিন্তু এ জন্য প্রয়োজন ধের্যধারণ এবং
হযরত নূহ (আঃ) এর পরিচয়::
হযরত নূহ (আঃ কে মহান আল্লাহ তাঁর কওমের কাছে সুস্পষ্ট বার্তা দিয়ে নবী ও রাসুল হিসাবে প্রেরণ করেন। যে বার্তা তিনি পৌঁছান তা হল (১) তাঁর কওমকে তাদের যন্ত্রণাময় শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করা এবং (২) এক আল্লাহর ইবাদতে আহ্বান করা। (২৫, ২৬)
তাঁর কওমের প্রতিক্রিয়া:
তত্কালীন সমাজের নেতৃস্থানীয় লোকদের প্রচন্ড বিরোধিতার সম্মুখীন হন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। যথা: আপনি আমাদের মতই সাধারণ মানুষ। নবী হলে তো ফেরেশতা হতেন। তাঁর অনুসারী কম বুদ্ধিসম্পন্ন ও নীচু শ্রেণীর লোকে রা।কওমের উপর কোন প্রাধান্য পরিদৃষ্ট হয় না। নূহ (আঃ)কে তারা মিথ্যাবাদী মনে করেন।
হযরত নূহ (আঃ) এর নবী রাসুল হবার প্রমাণ ও তাঁর চরিত্র:
নূহ (আঃ) বিনয়ের সাথে নবুয়্যতের সুস্পষ্ট প্রমাণ দেন।
তা হচ্ছে: তাঁর উপর আল্লাহর রহমত,অনর্থক এবং অযৌক্তিক কথা না বলা, ধর্মীয় বিশ্বাস জোর করে না চাপান। ধর্ম প্রচারের জন্য তাঁর কোন পারিশ্রমিক নাই। সমাজের দুর্বল ও দরিদ্র মানুষদের তিনি অবহেলা করেন না। নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের দেখেন মূর্খ সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী হিসাবে। আল্লাহর ধন ভান্ডারসমূহ তাঁর কাছে নাই।
অদৃশ্য সম্পর্কে জানেন না। যতটুকু আল্লাহ জানান ততটুকু জানেন।তিনি কোন মালিক নন। একজন সাধারণ মানুষ ।
আল্রাহর মনোনীক ব্যক্তি। মহান আল্লাহ তাঁকে ওহী পাঠান।
নূহ (আঃ) যুক্তিপূর্ণ কথা বলেন অহেতুক বিতর্ক করেন না।
হযরত নূহ (আঃ) এর দাওয়াত দেয়ার প্রক্রিয়া ও ফলশ্রুতি
কওমের নেতাদের এত লাঞ্ছনা -গঞ্জনা সত্বেও তিনি অত্যন্ত ধৈর্য ও বিনয় সহকারে শতাব্দীর পর শতাব্দী দাওয়াত দিতে থাকেন। তিনি অক্লান্তভাবে দাওয়াত দেয়া সত্বেও অল্পকিছু লোক ঈমান আনে। মহান আল্লাহ তাঁকে ওহী মারফত জানিয়ে দেন আর কেউ ঈমান আনবে না এবং তিনি যেন হতাশ না হন (৩৬) ।
নূহ (আঃ) দোয়া ও বদ দোয়া :
নূহ (আঃ) এর দোয়া ও আল্লাহর উত্তর (৪৫ -৪৮)
নূহ (আঃ) আল্লাহকে বলেন, " হে আমার পালনকর্তা আমার পুত্রতো আমার পরিবার ভুক্ত, আর আপনার ওয়াদাও সত্য, আর আপনিই সর্বপেক্ষা বিজ্ঞ ফয়সালাকারী
হে আমাদের রব! যে বিষয়ে আমার কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ে আপনাকে অনুরোধ না করার জন্য আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন এবং আমাকে দয়া না করেন, তবে আমি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তভূর্ক্ত হব।"
দোয়া কবুল না হলে মনক্ষুন্ন হবার কারণ নেই।
নূহের মহাপ্লাবন ও গযব::
আল্লাহ তাঁর নির্দেশ মোতাবেক নৌকা তৈরী করতে বললেন এবং দয়াপরবশ হয়ে জালিমদের ব্যাপারে কোন সুপারিশ করতে নিষেধ করলেন। নূহ (আঃ) নৌকা তৈরী করা শুরু করলেন এবং কওমের প্রচন্ড বিদ্রুপের সম্মুখীন হলেন। প্রতি উত্তরে তিনি তাদের বলেন "আমরাও তোমাদেরকে নিয়ে উপহাস করব যেমন তোমরা করছ।" তিনি তাদের লাঞ্ছনাকর আযাব সম্পর্কেও সচেতন করলেন।
নূহর জীবনী থেকে শিক্ষা ::
জাতির কাছ থেকে অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগ করা সত্বেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে হেদায়েত করে গেছেন। তিনি নিরাশ হন নি।
ঈমানী সম্পদ হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। আল্লাহর কাছে ঈমানদার লোকের মর্যাদা বেশী।
ঈমানহীন সমাজের নেতৃস্থানীয় লোকদের খুশী করার জন্য ঈমানদার লোকদের দূরে সরিয়ে দেয়া যাবে না।
বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করার সাথে সাথে নূহ (আঃ) এর নৌকা বানানোর মত বাস্তব চেষ্টা করতে হবে।
ধর্মীয় বন্ধন পারিবারিক বন্ধনের চেয়ে বড়।
অসত্ সঙ্গ নবী পুত্রকে পথভ্রষ্ট করতে পারে।
প্রত্যেকে প্রত্যেকের কর্মফল ভোগ করবে এটাই আল্লাহর বিধান।
যে বিষয়ে আমরা অবহিত নই সে বিষয়ে আমাদের চাওয়া উচিত নয়।
দোয়া কবুল না হলে মনক্ষুন্ন হবার কারণ নেই।
অনুচিত দোয়ার জন্য ক্ষমা ও দয়া প্রার্থনা করতে হবে।
আল্লাহর কাছে শান্তি ও রহমতের প্রত্যাশ্যা করতে হবে।
আল্লাহর করুণা ও দয়া বিশ্বব্যাপী। আন্তরিকভাবে য়ে চাইবে আল্লাহ তাকেই দান করেন।