সূরা কাহফ। রুকু ৭। সৎ লোকের বিরোধিতায় শয়তান।

 


কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে  জানুন, অন্যকে বলুন। 


দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।

রুকু ৭ আয়াত ৫০-৫৩
 সৎ লোকের বিরোধিতায় শয়তান।
 

৫০ নং আয়াত: বেহেশত থেকে মানুষের পতনের ইতিহাস। 
—-----------------------------------------------------------------------------------------------
যখন আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম, তোমরা সবাই আদমকে সাজদা কর, তখন তারা সবাই সাজদা করল ইবলিস ছাড়া; সে ছিল জিনদের একজন, সে তার মালিকের আদেশের নাফরমানী করলো; তোমরা কি তাকে এবং তার বংশধরদের আমার বদলে তোমাদের অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করবে, অথচ সে তোমাদের দুশমন; জালেমদের কি নিকৃষ্ট বিনিময় দেয়া হয়েছে
—----------------------------------------------------------------------------------------------
-   আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে হযরত আদম (আঃ) এর কাহিনী দ্বারা বেহেশত থেকে মানুষ কিভাবে পতিত হল তার ইতিহাস
-   ইবলিস আল্লাহ যে আদেশ দিয়েছিলেন সিজদা করার জন্য তা অমান্য করে
-   আল্লাহ ঘোষণা করেছেন ইবলিস মানুষের প্রধান শত্রু
-   মানুষকে প্রশ্ন করেছেন তারপরেও তারা কেন শয়তানের মন্ত্রণাতে চলে
-   আল্লাহ মানুষের অভিভাবকতিনি পরম করুণাময়, তারপরেও মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে ডাকে
-   যারা ইবলিসকে বন্ধু বলে মনে করে তার অর্থ তারা শয়তানের ডাকে সাড়া দিয়ে অন্যায় ও বিবেক বিরুদ্ধ কাজ করতে তৈরী হয়ে যায়
-   শয়তানের বংশধর অর্থ শয়তানের সন্তান নয়এরা তারা যারা পাপ ও অন্যায় কাজ লিপ্ত, প্রতি মূহুর্তে আল্লাহর আদেশ অমান্য করে তাদের বলা হয়েছে
-   পৃথিবীতে প্রায় সবকিছুতে দুটি অদৃশ্য শক্তি আছেভাল-মন্দ, পাপ-পূণ্য, ন্যয়-অন্যায়মানুষকে এই বোধ এবং স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেনযে এই ইচ্ছাকে অপব্যবহার করে মন্দ বা শয়তানের পথকে গ্রহণ করে তার শাস্তি তাকে পেতে হবে
-   যারা এ পথ গ্রহণ করে তারা নিজেদের উপর জুলুম করে
-   কিয়ামতের দিন তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে

৫১ নং আয়াত - তওহীদ।
—------------------------------------------------------------------------------------------------ 
৫১ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করার সময় আমি তাদের কাউকে ডাকিনি, এমনকি স্বয়ং তাদের বানানোর সময়ও; অন্যদের যারা গোমরাহ করে আমি তাদের বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করি না
—------------------------------------------------------------------------------------------------
-   আল্লাহ এখানে আদমকে সৃষ্টির আগের কথা বলছেন
-   আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন
-   তিনি কারো সাহায্য গ্রহণ করেন নি
-   শয়তানকেও তিনি সৃষ্টি করেছেন
-   যারা অন্যদের মন্দ কাজে অনুপ্রাণিত করে তারা কখনো আল্লাহর বন্ধু হতে পারে না
·  কাফের বা মুশরিকরা আল্লাহর বদলে শয়তানকে তাদের অভিভাবক বানিয়েছেতারা সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে জ্ঞাত নয় কারণ সৃষ্টি করার সময় আল্লাহ তাদের ডাকেন নিঅথচ শয়তানের অনুসারীরা মনে করে শয়তান সব জানেশয়তানকে বিশ্বাসের কারণে তারা আল্লাহতায়ালার সাথে শরীক করে এবং মনে করে আল্লাহরপ্রভুত্বে অংশীদার আছে। 

৫২ নং আয়াত
—------------------------------------------------------------------------------------------------
৫২ যেদিন তিনি বলবেন, তোমরা তাদের ডাকো যাদের তোমরা মনে করতে, অতএব ওরা তাদের ডাকবে তারা তাদের এ ডাকে কোন সাড়াই দেবে না, আমি এদের উভয়ের মাঝখানে এক ফাঁদ রেখে দেব
—------------------------------------------------------------------------------------------------
 
-   পাপীরা শেষ বিচারের দিন যাদের উপাসনা করত তাদের ডেকেও সাড়া পাবে না
-   উপাস্য ও উপাসকদের মধ্যে জাহান্নামের আগুন থাকবে

৫৩ নং আয়াত - নাফরমানদের শাস্তি ।
—------------------------------------------------------------------------------------------------ 
৫৩. নাফরমান লোকেরা যখন আগুন দেখতে পাবে তখন তারা বুঝে যাবে, তারা সেখানে গিয়ে পতিত হচ্ছেওরা তা থেকে কখনোই মুক্তির পথ পাবে না
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
-   নাফরমান লোকেরা ভালো করেই জানতো পার্থিব জীবন চিরস্থায়ী নয়
-   পরকালে তাদের কাজের শাস্তি পেতে হবে তা তারা মানত না


অনুধাবন
  • এই সৃষ্টি জগতের বস্তু সমূহ আল্লাহ একাই তৈরী করেছেন কারো সাহায্য নেন নি। তাঁর  কোন উপদেষ্টা ছিল না। তাই আল্লাহ  ছাড়াা আর কারো এবাদত বৈধ নয়। 
  • জীবন চিরস্থায়ী নয়।যে কোন অন্যায় কাজের শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে। 
  • আমাদের জীবদ্দশায় আল্লাহর ডাকে বিবেককে জাগ্রত করে নিজ নিজ কর্তব্য পালন করতে হবে। 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url