সূরা কাহফ। রুকু-২। গুহাবাসীদের কাহিনীর সূচনা।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।
রুকু ২ ।
আযাত ১৩-১৬।
গুহাবাসীদের কাহিনীর সূচনা
১৩ নং আয়াত: হাকীকি ঈমান।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
(১৩)আমরা আপনার কাছে তাদের বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছি, তারা তো ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের রবের উপর ঈমান এনেছিল এবং আমরা তাদের হিদায়াত বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- তারা তো ছিল কয়েকজন যুবক।
- তারা তাদের রবের উপর ঈমান এনেছিল।
- আমরা তাদের হিদায়াত বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম।
- মহান আল্লাহ যুবকদের অন্তরে এ কথা প্রক্ষিপ্ত করে দিলেন যে ইবাদতের মালিক একমাত্র আল্লাহ।
- আসহাবে কাহাফের যুবকদের উদাহরণ দিয়ে মহান আল্লাহ এ শিক্ষা দিচ্ছেন যে কেউ যদি খাঁটি মনে ঈমান (হাকীকি ইমান অর্থ প্রকৃত বিশ্বাস) আনে তবে মহান আল্লাহ তাদের সঠিক পথে চলার ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করে ন্যয় ও সত্যের পথে অবিচল থাকার সুযোগ করে দেন।
[বি. দ্র: - হাকীকি ঈমান অর্জিত হয় মানুষের মধ্যে যে কুপ্রবৃত্তি আছে তা বিনাশনের মাধ্যমে]
১৪ নং আয়াত: বিশুদ্ধ চিত্ত ও ধৈর্যশীল।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(১৪) আর আমরা তাদের চিত্ত দৃঢ করে দিলাম; তারা যখন উঠে দাঁড়াল তখন বলল, আমাদের রব। আসমানসমূহ ও যমীনের রব। আমরা কখনই তাঁর পরিবর্তে অন্য ইলাহকে ডাকব না; যদি ডাকি, তবে আমরা অত্যন্ত গর্হিত কাজ করলাম।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- আল্লাহ তাদের চিত্তে ঢুকিয়ে দেন তাদের কি কর্মপন্থা অবলম্বন করা উচিত।
- তাঁরা দাড়াল অর্থ হল তারা দৃঢ়সংকল্প করল।
- তাঁরা স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছাল তাদের প্রভু গোটা বিশ্ব জগতের প্রভু।
- তিনি এক ও অদ্বিতীয়।
- তাঁকে ছাড়া অন্য কোন মাবুদকে ডাকব না।
- তাঁরা তাঁদের জীবনের বিপদ আপদকে আনন্দচিত্তে গ্রহণ করল।
[আসহাবে কাহফের পার্থিব আকর্ষণ একদমই ছিলনা । তারা পৌছে গিয়েছিলেন আত্ম বিনাশন বা ফানা স্তরে। তাদের হৃদয়ে আল্লাহ ছাড়া আর কারো স্থান ছিল না।]
- তাঁকে ইলাহ না মানা অত্যন্ত গর্হিত কাজ অথবা বলা যায় সীমা লংঘন করা ।
১৫ নং আয়াত: অজ্ঞ ও মিথ্যা উদ্ভাবনকারী।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমাাদের এ স্বজাতিরা তার পরিবর্তে অনেক ইলাহ গ্রহণ করেছে, তারা এসব ইলাহ সম্পর্কে স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? আর যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে তার চেয়ে বড় জালিম আর কে হতে পারে?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- যুবকদের জাতি অনেক ইলাহের পূজারী।
- তাদের এসব ইলাহ সম্পর্কে কোন বলিষ্ঠ ও সুষ্পষ্ট প্রমান নেই।
যুবকরা মনে করে প্রমাণহীন বিষয় পরিত্যজ্য।
- আল্লাহর শরীক আছে এটি অত্যন্ত বড় মিথ্যা।
১৬ নং আয়াত:: গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করা।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(১৬) (যুবকরা একে অপরকে বলল) আর তোমরা যখন তাদেরকে ও তারা পরিবর্তে যাদের ইবাদত করে তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তখন তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ কর, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য তার দয়া বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজকর্মকে ফলপ্রসূ করার ব্যবস্থা করবেন।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- জাতির উপাস্যসমূহ যেরকম বাতিল করেছ তেমনি দৈহিকভাবে তাদের থেকে দূরে সরে যাও।
- এখান থেকে শিক্ষণীয় যে যদি দেখা যায কোথাও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে সেখানে উপস্থিত থাকলে তাওহীদ ও ঈমান বজায় রাখা সম্ভব না সেখান থেকে হিজরত করাই ভাল।
- মহান আল্লাহ তাদের যাবতীয় কর্মকান্ডকে সহজ করে দিলেন।
- যে উপকরণটি কষ্টকর স্থানকেও সুখময় বানায় তা হচ্ছে ‘ইমান’।
১৭নং আয়াত:: আল্লাহর অপার পরিক্রমার বহিঃপ্রকাশ।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(১৭). আর উদয়ের সময়ে তুমি সূর্যকে দেখবে তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিক দিয়ে চলে যায় এবং যখন সেটি অস্ত যায় তাদের পাশ কেটে বাম দিক দিয়ে চলে যায়, অথচ তাঁরা ছিল এর (গুহার) ফাঁকা স্থানে, বস্তুত এটা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভূক্ত; আল্লাহ যাকে (অতাত্ক্ষণিক) সঠিকপথে পরিচালনা করেন সে সঠিক পথপ্রাপ্ত, আর তিনি যাকে (অতাত্ক্ষণিক) পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনো তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবে না। [আল্লাহর তৈরী প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী পথভ্রষ্ট হয় তুমি কখনো তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবে না।]
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- এখানে যুবকদের অবস্থার বিমূর্ত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
- পর্বত গুহায় যুবকদের গায়ে সরাসরি রোদ না পড়ে তার জন্য যেন সূর্য ইচ্ছাকৃতভাবে হেলে গিয়েছে।
- এটি আল্লাহর একটি নিদর্শন যে সূর্য যুবকদের কাছে গিয়ে আলো দিলেও তার তীব্র কিরণ তাদের ঘুমের ব্যঘাত ঘটায় না। [ এটা যদি স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনা হত তবে আল্লাহ তাঁর ব্যবস্থাপনার কথা বলতেন না। ]
- আল্লাহ বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তাদেরকে সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করেছেন।
- যে ব্যক্তি আল্লাহর হেদায়েতের উপকরণের সদ্ব্যবহার করে না সে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী হয়।
- এরপর তাদের জন্য আর পথ প্রদর্শক খুঁজে পাওয়া যায় না।
- পথপ্রাপ্তি ও পথ ভ্রষ্টতা সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।