সূরা ইউনূস। রুকু -৭ । বিশ্বাসীদের জন্য সুসংবাদ।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
সূরা ইউনুস । রুকু ৭
আয়াত ৬১ - ৭০
বিশ্বাসীদের জন্য সুসংবাদ।
এর আগের রুকুতে আল্লাহর তৌহিদের কথা বলা হয়েছে। এই রুকুতে আল্লাহর জ্ঞান বা ইলম আকাশ ও পৃথিবীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা সম্পর্কে নখদর্পণে আছে তা বলা হয়েছে।
৬১ নং আয়াত: সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপস্থিতি।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬১) (হে নবী)তুমি যে অবস্থায় থাক না কেন এবং সে (কাজ) সম্পর্কে কুরআন থেকে যা কিছু তেলওয়াত করো না কেন (তা আমি জানি, হে মানুষেরা), তোমরা যে কোন কাজ করো, কোন কাজে তোমরা প্রবৃত্ত হও, আমি তার ব্যাপারে তোমাদের ওপর সাক্ষী হয়ে থাকি, তোমার মালিকের (দৃষ্টি) থেকে একটি অণু পরিমাণ জিনিস ও গোপন থাকে না, আসমান ও জমীনে এর চাইতে ছোট কিংবা এর চাইতে বড় কোন কিছুই নেই যা এই সুস্পষ্ট গ্রন্থে লিপিবদ্ধ নেই।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ সম্পর্কে চেতনা সৃষ্টি।
আল্লাহর অসীম জ্ঞানের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
তিনি মানুষের সব অবস্থা ও কাজ-কর্ম সম্পর্কে অবহিত।
পৃথিবীর যাবতীয় অণু পরমাণু এমনকি তার থেকেও ক্ষুদ্রতর জিনিস তার দৃষ্টিসীমার আওতাভূক্ত।
আমাদের কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা, চিন্তা চেতনা কোন কিছুই আল্লাহর অগোচরে নয়। আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা সব জানেন এবং আমাদের কোন কিছুই তাদের কাছে গোপনীয় নয়।
আল্লাহর কাছে আকাশ-জমিন, ক্ষুদ্র বৃহৎ এসবের কোন পার্থক্য নেই। তার অস্তিত্ব সর্বত্র এবং সব কিছুই তার জ্ঞানের পরিধির আওতায়।
শুধু সাধারণ মানুষ নয় নবী রাসুলগণও আল্লাহর উপর নজর রেখেছেন এবং তাদের কাজকর্ম প্রত্যক্ষ করেন।
গোটা বিশ্ব আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। ফলে, আমাদের কাজের জন্য তৎক্ষণাৎ শাস্তি না পাওয়ার অর্থ এই নয় যে তিনি আমাদের কৃতকর্মের ব্যাপারে অবহিত নন। তিনি উদাসীন।
আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ আমাদের প্রকত যে আমরা তওবা করে ফিরে আসতে পারি।
আল্লাহ আছেন তা অনুধাবন করলে কি হয়?
আল্লাহ আছেন। এটা বুঝতে পারলে মানুষের মন যেমন একদিকে নিশ্চিত হয় আবার অপরদিকে ভীত হয়।
আল্লাহর সাথে একদিকে যেমন মহব্বত সৃষ্টি হয় আবার আরেকদিকে তাঁকে ভয় করতে শিখি।
কল্পনা করুন:
আপনি জানেন ও বিশ্বাস করেন আল্লাহ আছে। তাহলে আপনার মন-মানসিকতা এবং আচরণ কেমন হবে?
আপনার অনুভূতি সমূহ কি কি হতে পারে?
- আল্লাহর সামনে আপনি হাজির আছেন।
- আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও দাপটের কাছে আপনি কিছুই না।
- আপনার কোন ক্ষমতা নেই। সার্বভৌম ক্ষমতা ও শক্তি একমাত্র আল্লাহর।
- আল্লাহ গোটা সৃষ্টিকুলের সৃষ্টিকর্তা । আমি সেখানে একটি কণা মাত্র।
- আল্লাহ ছোট বড় সবাইকে নিরাপত্তা দেন।
- আল্লাহর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা জমিনে ও আসমানে যত অণু পরমাণু আছে তাকে ঘিরে আছে।
- আল্লাহর জ্ঞান সর্বত্র বিরাজ করে।
- আল্লাহ সবকিছু জানেন, পরিচালনা করেন এবং তদারকী করেন।
- আল্লাহ প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য নানা বিধান করে রেখেছেন যাকে আমরা বিজ্ঞান বলি।
- তার অগোচরে কিছুই ঘটে না।
- অথচ মানুষের নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাববার প্রবণতা আছে।
- তারা নিজেকে সর্বোচ্চ বুদ্ধিমান ব্যক্তি বলে মনে করে।
মানুষ যদি আল্লাহর এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করে, আল্লাহর মর্যাদার কথা বুঝতে পারে, উপলব্ধি করতে পারে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখে তবে মানুষের মধ্যে আল্লাহ ভীতি আসতে বাধ্য। যখন তাদের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে ঈমান আসে, আল্লাহর নৈকট্য অনুভব করতে পারে তখন তার হৃদয়ে প্রশান্তি নেমে আসে। আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ মেনে চলে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় আল্লাহর দেয়া বিধি বিধানকে অনুসরণ করে।
৬২, ৬৩, ৬৪, নং আয়াত:প্রকৃত ঈমানদার ও সতকর্মশীলদের অবস্থা ও তাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬২) জেনে রেখো, (কেয়ামতের দিন) আল্লাহ তায়ালার বন্ধুদের (আওলিয়) জন্যে (কোন) ভয় নাই, (সেদিন) তারা চিন্তিতও হবে না।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৩) যাহারা ঈমান আনে ও তাকওয়া অবলম্বন করে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৪) তাহাদের জন্য আছে সুসংবাদ দুনিয়ার জীবন ও আখিরাতে, আল্লাহর বাণীর কোন পরিবর্তন নাই; উহাই মহাসাফল্য।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহতায়ালার বন্ধুদের কোন ভয় বা শঙ্কা থাকে না।
পুনরুত্থান দিবসে তাদের নে কোন আযাব বা শাস্তির ভয় থাকবে না।
তাদের প্রতি আল্লাহর সবচেয়ে বড় অনুগ্রহ হল তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদের মানসিক প্রশান্তি দান করেন।
তাদের মন থেকে দুশ্চিন্তা, দুঃখবোধ , উদ্বিগ্নতা দূর করে দেন।
শিক্ষণীয় :
আল্লাহর বন্ধু যারা তাদের কোন ভয়-ভীতি নেই। আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না।
তারা দুঃখিত হবে না। তাদের মনে সব সময় শান্তি বিরাজ করবে।
আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে।
আল্লাহর ভয়ে বাছ বিচার করে চলেছে।
অর্থ্যাৎ আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ মেনে চলেছে। পাপ পঙ্কিলতা থেকে দূরে থাকে।
তাদের জন্য দুনিয়ার জীবন ও আখেরাতের জীবন দুজায়গায় সুসংবাদ অপেক্ষা করছে।
ঈমান ও তাকওয়ার কারণে তারাই মহাসফলতা লাভ করবে।
আল্লাহর প্রতিশ্রুতির কোন পরিবর্তন হয় না।
৬৫ নং আয়াত: পূণ্যাত্মারা আল্লাহর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৫) উহাদের কথা তোমাকে যেন দুঃখ না দেয়। সমস্ত শক্তিই আল্লাহর; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদিও রাসুল (সঃ)কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। তবে তা সর্বকালের পূণ্যাত্মাদের জন্য প্রযোজ্য।
পাপী ও মন্দ লোকদের কথায় কষ্ট পাওয়া উচিত নয়।
তাদের কথায় দুঃখিত হওয়া উচিত নয়।
সমস্ত শক্তির উৎস আল্লাহ।
মানুষের সম্মান আল্লাহর কাছ থেকে আগত।
আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
৬৬ নং আয়াত: আল্লাহর সাথে যা শরীক করা হয় তার মালিক আল্লাহ।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৬) জানিয়া রাখ! যাহারা আকাশমন্ডলে আছে এবং যাহারা পৃথিবীতে আছে তাহারা আল্লাহরই। যাহারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে শরীকরূপে ডাকে, তাহারা কিসের অনুসরণ করে? তাহারাতো শুধু অনুমানেরই অনুসরণ করে এবং তাহারা শুধু মিথ্যাই বলে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আকাশ ও পৃথিবীতে জড় ও অজড় যা কিছু আছে তার মালিক ও সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ।
আল্লাহর সাথে যাদের শরীক সাব্যস্ত করা হয় তাদের মালিকও আল্লাহ।
অংশীবাদীতা তারা অনুমান করে বলে।
তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে।
ইসলামের শত্রুরা সব সময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত। এই আয়াত থেকে এই শিক্ষা নেয়া যায় যে, মুসলিম নেতাদের হত্যা করে সত্যের আলো নিভিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। আল্লাহ তার ঈমানদার বান্দাদের রক্ষা করেন।
৬৭ নং আয়াত::বিশ্ব পরিচালনা ও প্রকৃতির নিয়ম।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৭) তিনি সৃষ্টি করিয়াছেন তোমাদের জন্য রাত্রি, যেন উহাতে তোমরা বিশ্রাম করিতে পার এবং দিবস দেখিবার জন্য। যে সম্প্রদায় কথা শুনে নিশ্চয়ই তাহাদের জন্য ইহাতে আছে নিদর্শন।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ সময়কে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। দিন ও রাত।
আল্লাহ রাত সৃষ্টি করেছেন যাতে মানুষ বিশ্রাম করতে পারে।
দিন সৃষ্টি করেছেন যাতে পরিশ্রম করতে পারে।
দিন ও রাত সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে শ্রবণশীল জাতির জন্য নিদর্শন।
বিশ্ব ব্যবস্থার কোন কিছুই উদ্দেশ্যহীন নয় বা এসব কিছু কোন আকষ্মিক ঘটনার ফল নয়। বিশ্ব ব্যবস্থার সব কিছুই বিশেষ লক্ষ্যে ও পরিকল্পিত উপায়ে পরিচালিত হচ্ছে।
৬৮, ৬৯, ৭০ নং আয়াত:: তওহীদ।
--------------------------------------------------------------------------------- ----------------------------------------
(৬৮) তাহারা বলে, 'আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করিয়াছেন।' তিনি পবিত্র! তিনি অভাবমুক্ত! যাহা কিছু আছে আকাশমন্ডলে ও যাহা কিছু আছেপৃথিবীতে তাহা তাঁহারই। এ বিষয়ে তোমাদের নিকট কোন সনদ নেই। তোমরা কি আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলিতেছ, যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নাই?
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৯) বল, "যাহারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করিবে তাহারা সফলকাম হইবে না।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৭০) পৃথিবীতে ইহাদের জন্য আছে কিছু সুখ-সম্ভোগ; পরে আমারই নিকট উহাদের প্রত্যাবর্তন। অতএব কুফরী হেতু উহাদেরকে আমি কঠোর শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করাইব।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
মুসলিম হবার প্রথম শর্ত বিশ্বাস করতে হবে আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়।
তাঁর সমকক্ষ এবং শরীক নেই।
সৃষ্টিকর্তা আল্লহ সর্বশক্তিমান এবং মহাপরাক্রমশালী।
তাঁর অক্ষমতা, দুর্বলতা কল্পনা অপরিকল্পিত।
তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন এবং তার কোন অভাব নে্ই।
সব কিছু তারই সৃষ্টি ।
মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে তাকে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।
পুত্র - কন্যা গ্রহণ এই অসীম সত্তার জন্য বেমানান।
যদিও অংশীবাদীরা বলে আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।
সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য পৃাথিবীতে আছে সুখ-সম্ভোগ
তারপর আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
আল্লা্হ তখন তাদের কঠোর শাস্তি দেবেন।
আল্লাহ সব ধরণের বস্তুগত চাহিদা বা প্রয়োজনের উর্ধে। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন এবং কারো উপর নির্ভরশীল নন। জগতের সবাই তার মুখাপেক্ষী এবং নির্ভর শীল।
আমার অনুধাবন:
আল্লাহ সম্পর্কে চেতনা সৃষ্টি।
এর আগের রুকুতে আল্লাহর তওহীদ কথা বলা হয়েছে। এই রুকুতে আল্লাহর ইলম বা জ্ঞান আসমান ও জমীনের সবকিছু পরিবেষ্টিত করে রেখেছে তা এরশাদ করা হয়েছে । সে সাথে সাথে দুটো উদ্দেশ্য স্মনে রেখে আল্লাহর বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে।
একটি উদ্দেশ্য হল কাফের ও মুশরিকদের সতর্ক করা এবং জানিয়ে দেয়া তারা যে আল্লাহর বিরোধিতা করছে সে সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। তাদের ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না।
আর দ্বিতীয়ত হল: হযরত মুহাম্মদ (সঃ)কে সান্তনা দেয়া কাফের ও মুশরিকদের ষড়যন্ত্রে ঘাবড়ানোর কিছু নাই। আল্লাহর কাছে কোন কর্মক্ন্ড তা যতই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হোক না কেন তা আল্লাহ জানেন। তিনি সর্বজ্ঞ ও সর্ব শ্রোতা।
আমি এখানে প্রধানত ৬১ নং আয়াতের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করব।
৬১ নং আয়াতের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে চেতনা সৃষ্টি এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপস্থিতির কথা জ্ঞাত করা।
এই আয়াতে আল্লাহর অসীম জ্ঞানের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। সে সাথে তিনি যে মানুষের সব অবস্থা ও কাজ-কর্ম সম্পর্কে অবহিত তা এরশাদ করা হযেছে।
এই পৃথিবীর যাবতীয় অণু পরমাণু এমনকি তার থেকেও ক্ষুদ্রতর জিনিস তার দৃষ্টিসীমার আওতাভূক্ত।
এখান থেকে আমাদের শিক্ষণীয়:
আমাদের কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা, চিন্তা চেতনা কোন কিছুই আল্লাহর অগোচরে নয়। আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা সব জানেন এবং আমাদের কোন কিছুই তাদের কাছে গোপনীয় নয়।
আল্লাহর কাছে আকাশ-জমিন, ক্ষুদ্র বৃহত্ এসবের কোন পার্থক্য নেই। তার অস্তিত্ব সর্বত্র এবং সব কিছুই তার জ্ঞানের পরিধির আওতায়।
শুধু সাধারণ মানুষ নয় নবী রাসুলগণের উপরও আল্লাহ নজর রেখেছেন এবং তাদের কাজকর্ম প্রত্যক্ষ করেন।
গোটা বিশ্ব আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। আমাদের কাজের জন্য তত্ক্ষণাত শাস্তি না পাওয়ার অর্থ এই নয় যে তিনি আমাদের কৃতকর্মের ব্যাপারে অবহিত নন। তিনি উদাসীন।
এখন প্রশ্ন হতে পারে আল্লাহ আছেন তা অনুধাবন করলে কি হয়?
আল্লাহ আছেন। এটা বুঝতে পারলে মানুষের মন যেমন একদিকে নিশ্চিত হয় আবার অপরদিকে ভীত হয়।
আল্লাহর সাথে একদিকে যেমন মহব্বত সৃষ্টি হয় আবার আরেকদিকে তাঁকে ভয় করতে শিখি।
কল্পনা করুন:
আপনি জানেন ও বিশ্বাস করেন আল্লাহ আছে। তাহলে আপনার মন-মানসিকতা এবং আচরণ কেমন হবে?
- আল্লাহর সামনে আপনি হাজির আছেন।
- আপনার কোন ক্ষমতা নেই। সার্বভৌম ক্ষমতা ও শক্তি একমাত্র আল্লাহর।
- আল্লাহ গোটা সৃষ্টিকুলের সৃষ্টিকর্তা । আমি সেখানে একটি কণা মাত্র।
- আল্লাহ ছোট বড় সবাইকে নিরাপত্তা দেন।
- আল্লাহর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা জমিনে ও আসমানে যত অণু পরমাণু আছে তাকে ঘিরে আছে।
-- আল্লাহর অগোচরে কিছুই ঘটে না।
মানুষ যদি আল্লাহর এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করে, আল্লাহর মর্যাদার কথা বুঝতে পারে, উপলব্ধি করতে পারে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখে তবে মানুষের মধ্যে আল্লাহ ভীতি আসতে বাধ্য। যখন তাদের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে ঈমান আসে, আল্লাহর নৈকট্য অনুভব করতে পারে তখন তার হৃদয়ে প্রশান্তি নেমে আসে। আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ মেনে চলে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় আল্লাহর দেয়া বিধি বিধানকে অনুসরণ করে। তবে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে।
আল্লহর ওলী বা পূণ্যাত্মাদের বৈশিষ্ট্য::
আল্লাহতায়ালার ওলীদের কোন ভয়-শঙ্কা থাকে না। (অর্থ্যাৎ আখেরাতের হিসাব নিকাশের পর তারা সহজেই জান্নাতে প্রবশ করতে পারবে। তারা শাস্তি পাবার ভয় ও শঙকা থেকে চিরতরে মুক্ত থাকবে।)
(অনেক তাফসীরকারকের মতে ওলীদের বৈশিষ্ট্য এই যে দুনিয়া ও আখেরাতে তারা সব রকম চিন্তা-ভাবনা, দুঃখ - বেদনা থেকে মুক্ত থাকবে। পার্থিব জীবনে তাদের যত ক্ষয়-ক্ষতি, কিংবা দুুঃখ-বেদনা থাকু না কেন তারা মুষড়ে পড়ে না। আল্লাহ প্রদত্ত বলে তারা মেনে নেয়।)
আরবীতে 'ওলী' শব্দের অর্থ নিকটবর্তী বা বন্ধু। আউলিয়া ওলী শব্দের বহু বচন। যারা আল্লাহর নৈকর্ট লাভে সক্ষম হয় তারাই আল্লাহর ওলী। ওলীদের অন্তরাত্মা আল্লাহতায়ালার স্মরণে এমন ডুবে থাক যে, পৃথিবীতে কারো মায়া বা স্নেহ মমতা তাকে আল্রাহর স্মরণ হতে ভুলাতে পারে না।
তাদের ভিতর দুটো বৈশিষ্ট্য দেখা যায় জিকিরের আধিক্য ও সার্বক্ষণিকতা।
তারা কোন কাম্য বস্তু হতে বঞ্চিত হলে শোকাভিভূত হয় না।