সূরা ইউনুস । রুকু ৩। হাশেরর ময়দান।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময় দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যিনি তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ দ্বারা আমাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করেন, আমাদের জলে-স্থলে ভ্রমণ করান এবং আনুগত্য সহকারে একনিষ্ঠভাবে ডাকলে বিপদ থেকে রক্ষা করেন। লক্ষ কোটি দরূদ ও সালাম আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উপর যিনি আমাদের সাবধান করেছেন সেদিনের ব্যাপারে যেদিন আমাদের সবাইকে সমবেত করা হবে।
সূরা ইউনুস
রুকু - ৩
হাশরের ময়দান।
২১ নং আয়াত - আল্লাহর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------(২১) আর দুঃখ-দৈন্য তাহাদেরকে স্পর্শ করিবার পর, যখন আমি মানুষকে অনুগ্রহের আস্বাদন করাই তাহারা তখনই আমার নিদর্শনের বিরুদ্ধে অপকৌশল করে। বল, ‘ আল্লfহ অপকৌশলের শাস্তিদানে দ্রুততর।’ তোমরা যে অপকৌশল কর তাহা অবশ্যই আমার ফিরিশতাগণ লিখিয়া রাখে।
—-----------------------------------------------------------------------------------------------------যতক্ষণ দুঃখ-দৈন্য থাকে ততক্ষণ আল্লাহকে স্মরণ করে।
(২২) তিনিই তোমাদেরকে জলেস্থলে ভ্রমণ করান এবং তোমরা যখন নৌকারোহী হও এবং এইগুলি আরোহী লইয়া অনুকূল বাতাসে বহিয়া যায় এবং তাহারা উহাতে আনন্দিত হয়, অতঃপর এইগুলি বাত্যাহত এবং সর্বদিক হইতে তরঙ্গাহত হয় এবং তাহারা উহা দ্বারা পরিবেষ্টিত হইয়া পড়িয়াছে মনে করে, তখন তাহারা আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া আল্লাহকে ডাকিয়া বলে - ‘ তুমি আমাদেরকে ইহা হইতে ত্রাণ করিলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত হইব।’
—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৩) অতঃপর তিনি যখনই উহাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখনই উহারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে জুলুম করিতে থাকে। হে মানুষ! তোমাদের জুলুম বস্তুত তোমাদের নিজেদের প্রতিই হইয়া থাকেচ পার্থিব জীবনের সুখ ভোগ করিয়া নাও, পরে আমারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখনই আমি তোমাদেরকে জানাইয়া দিব তোমরা যাহা করিতে।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৪) বস্তুত পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত এইরূপ- যেমন আমি আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করি যদ্বারা ভূমিজ উদ্ভিদ ঘন-সন্নিাবষ্ট হইয়া উদগত হয়, যাহা হইতে মানুষ ও জীবজন্তু আহার করিয়া থাকে। অতঃপর যখন ভূমি তাহার শোভা ধারণ করে ও নয়নাভিরাম হয় এবং উহার অধিকারীগণ মনে করে উহা তাহোদের আয়াত্তাধীন, তখন দিবসে অথবা রজনীতে আমার নির্দেশ আসিয়া পড়ে ও আমি উহা এমনভাবে নির্মূল করিয়া দেই, যেন গতকালও উহার অস্তিত্ব ছিল না। এইভাবে আমি নিদর্শনাবলী বিশদভাবে বিবৃত করি চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৫) আল্লাহ শান্তির আবাসের দিকে আহ্বান করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- যখন আল্লাহর অনুগ্রহে বিপদ দূর হয়ে যায়, সুসময় আসে তখনই কূটকৌশল বা ছলচাতুরী করে।
- আল্লাহকে বাদ দিয়ে চালাকি করে অন্যান্য বিষয়কে তাদের বিপদমুক্তির কারণ হিসাবে বিবেচনা করে।
- আল্লাহ কূটকৌশল অবলম্বনকারীকে দ্রুত শাস্তি দেন।
- ফেরেশতরা ব্যক্তির কূট কৌশল লিখে রাখে।
২২ নং আয়াত- তওহীদের বর্ণনা ও কাফিরদের ভয় প্রদর্শন ।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------(২২) তিনিই তোমাদেরকে জলেস্থলে ভ্রমণ করান এবং তোমরা যখন নৌকারোহী হও এবং এইগুলি আরোহী লইয়া অনুকূল বাতাসে বহিয়া যায় এবং তাহারা উহাতে আনন্দিত হয়, অতঃপর এইগুলি বাত্যাহত এবং সর্বদিক হইতে তরঙ্গাহত হয় এবং তাহারা উহা দ্বারা পরিবেষ্টিত হইয়া পড়িয়াছে মনে করে, তখন তাহারা আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া আল্লাহকে ডাকিয়া বলে - ‘ তুমি আমাদেরকে ইহা হইতে ত্রাণ করিলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত হইব।’
—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৩) অতঃপর তিনি যখনই উহাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখনই উহারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে জুলুম করিতে থাকে। হে মানুষ! তোমাদের জুলুম বস্তুত তোমাদের নিজেদের প্রতিই হইয়া থাকেচ পার্থিব জীবনের সুখ ভোগ করিয়া নাও, পরে আমারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখনই আমি তোমাদেরকে জানাইয়া দিব তোমরা যাহা করিতে।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- মহান আল্লাহ মানুষকে জলে স্থলে নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করান।
- মানুষ যখন নৌকা ( অন্যন্য জলযান হতে পারে।) নিয়ে সফরে যায়।
- অনুকূল বাতাসে যখন জলযানগুলো চলে নৌকারোহীরা আনন্দিত হয়।
- কিন্তু যখন ঝড় হয় এবং বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের আঘাতে নৌকা দুলতে শুরু করে তখন তারা উদ্বিগ্ন হয়ে যায়।
- বিশুদ্ধচিত্তে আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ করে এবং বিপদ থেকে মুক্তি চায় ।
- তারা আল্লাহকে সম্বোধন করে বাঁচতে চায় এবং কথা দেয় যে তারা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।
- আল্লাহ যখন তাদের বিপদমুক্ত করেন তখন তারা দেশে অন্যায় ভাবে জুলুম করে।
- মহান আল্লাহ তাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছেন , তারা যে মনে করে অন্যের উপর জুলুম করছে তা নয় এর প্রতিক্রিয়া এসে তাদের নিজেদের উপরে পড়বে।
- তাদেরই পাপ হবে এবং শাস্তি ভোগ করবে।
- তোমাদের মৃত্যু পর্যন্ত যত খুশী পার্থিব ভোগ বিলাসে মত্ত থাকতে পারে।
- মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। আল্লাহ তখন তাদের ভালো করে জানিয়ে দিবেন যে সব অপকর্ম তারা করত।
২৪ ও ২৫ নং আয়াত- ফসলের ক্ষেতের সাথে মানুষের জীবনের তুলনা।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------(২৪) বস্তুত পার্থিব জীবনের দৃষ্টান্ত এইরূপ- যেমন আমি আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করি যদ্বারা ভূমিজ উদ্ভিদ ঘন-সন্নিাবষ্ট হইয়া উদগত হয়, যাহা হইতে মানুষ ও জীবজন্তু আহার করিয়া থাকে। অতঃপর যখন ভূমি তাহার শোভা ধারণ করে ও নয়নাভিরাম হয় এবং উহার অধিকারীগণ মনে করে উহা তাহোদের আয়াত্তাধীন, তখন দিবসে অথবা রজনীতে আমার নির্দেশ আসিয়া পড়ে ও আমি উহা এমনভাবে নির্মূল করিয়া দেই, যেন গতকালও উহার অস্তিত্ব ছিল না। এইভাবে আমি নিদর্শনাবলী বিশদভাবে বিবৃত করি চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৫) আল্লাহ শান্তির আবাসের দিকে আহ্বান করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ ফসলের ক্ষেতরে সাথে মানুষের জীবনকে তুলনা করেছেন।
প্রথম ধাপঃ মহান আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
২য় ধাপঃবৃষ্টির ফলে ভূমিতে নানা ধরণের ফুল, ফল ও ফসল জন্মায়।
৩য় ধাপঃ ভূমি নয়নাভিরাম শোভা ধারণ করে।
৪র্থ ধাপঃ মানুষ মনে করে এটা তার জন্যই হয়েছে। তারই আয়াত্তাধীন। কারো সাধ্য নেই এতে হস্তক্ষেপ করা।
৫ম ধাপঃ মহান আল্লাহ দিনে বা রাতে যখন নির্দেশ দেন তখন সেই
নয়নাভিরাম বাগান ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করে দেন।
৬ষ্ঠ ধাপঃ দেখে মনে হয়না সেখানে কোন ফসলের ক্ষেত ছিল।
প্রথম ধাপঃ মহান আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
২য় ধাপঃবৃষ্টির ফলে ভূমিতে নানা ধরণের ফুল, ফল ও ফসল জন্মায়।
৩য় ধাপঃ ভূমি নয়নাভিরাম শোভা ধারণ করে।
৪র্থ ধাপঃ মানুষ মনে করে এটা তার জন্যই হয়েছে। তারই আয়াত্তাধীন। কারো সাধ্য নেই এতে হস্তক্ষেপ করা।
৫ম ধাপঃ মহান আল্লাহ দিনে বা রাতে যখন নির্দেশ দেন তখন সেই
নয়নাভিরাম বাগান ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করে দেন।
৬ষ্ঠ ধাপঃ দেখে মনে হয়না সেখানে কোন ফসলের ক্ষেত ছিল।
- আল্লাহ চিন্তাশীল সম্প্রদায়কে এই বিষয় চিন্তা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
- মহান আল্লাহ মানুষদেরকে শান্তি আবাস বা “দারুস সালামের” দিকে ডাকেন।
- যাকে ইচ্ছা তাকে সরল পথ বা “সীরাতুল মুস্তাকীমে’ পরিচালিত করেন।
২৬ ও ২৭ নং আয়াতঃ জান্নাত বাসী ও জাহান্নাম বাসী
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------(২৬) যাহারা কল্যাণকর কাজ করে তাহাদের জন্য আছে কল্যাণ এবং আরও অধিক। কালিমা ও হীনতা উহাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছন্ন করিবে না। উহারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে উহারা স্থায়ী হইবে।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৭) যাহারা মন্দ কাজ করে তাহাদের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ এবং তাহাদেরকে হীনতা আচ্ছন্ন করিবে; আল্লাহ হইতে উহাদেরকে রক্ষা করিবার কেহ নাই, উহাদের মুখমন্ডল যেন রাত্রির অন্ধকার আস্তরণে আচ্ছাদিত। উহারা দোজখের অধিবাসীষ সেখানে স্থায়ী হইবে।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
- যারা ভাল কাজ (আহসানুল হুসনা) করে তাদের জন্য আছে কল্যাণ অর্থ্যাৎ জান্নাত ও আরো অধিক কল্যাণ।
- কালিমা ও হীনতা তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছন্ন করিবে না।
- তারা স্থায়ীভাবে জান্নাতবাসী হইবে।
- জান্নাতবাসীদের কোন দুঃখবেদনা কিংবা বিষন্নতা নেই।
- যারা নিকৃষ্ট কাজ করে তারা নিকৃষ্টতার প্রতিফল পাবে।
- তাদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখবে লাঞ্ছনা ।
- আল্লাহ থেকে তাদের রক্ষা করার কেউ নেই।
- তাদের চেহারা দেখে মনে হবে যেনো অন্ধকার রাত্রির অংশ দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে।
- সত্যপ্রত্যাখানকারীরা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের অধিবাসী
২৮, ২৯ ও ৩০ নং আয়াতঃ হাশর দিবস।
—------------------------------------------------------------------------------------(২৮) এবং যেদিন আমি উহাদের সকলকে একত্র করিয়া, যাহারা মুশরিক তাহাদেরকে বলিব, ‘তোমরা এবং তোমরা যাহগাদেরকে শরীক করিয়াছিলে তাহারা স্ব স্ব স্থানে অবস্থান কর,’ আমি উহাদেরকে পরস্পর হইতে পৃথক করিয়া দিব এবং উহারা যাহাদেরকে শরীক করিয়াছিল তাহারা বলিবে, ‘তোমরা তো আমাদের ‘ইবাদত করিতে না।’
—------------------------------------------------------------------------------------
(২৯) ’আল্লাহই আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট যে, তোমরা আমাদের ইবাদত করিতে এ বিষয়ে আমরা তো গাফিল ছিলাম।’
—------------------------------------------------------------------------------
(৩০) সেখানে তাহাদের প্রত্যেকে তাহার পূর্বকৃত কর্ম পরীক্ষা করিয়া লইবে এবং উহাদেরকে উহাদের প্রকৃত অভিভাবকক আল্লাহর নিকট ফিরাইয়া আনা হইবে এবং উহাদের উদ্ভাবিত মিথ্যা উহাদের নিকট হইতে অন্তর্হিত হইবে।
---------------------------------------------------------------------------------------
- যে দিন সব মানুষকে একত্রিত করা হবে সেদিনের স্মরণ করতে বলা হয়েছে।
- মুশরিকদের বলা হবে তাদের পূজার প্রতিমা নিয়ে দাঁড়াতে।
- তাদেরকে আগে তাদের অপকর্ম দেখে নিতে বলা হবে।
- এরপর অংশবাদী মুশরিক ও বাতিল উপাস্যদের মধ্যে প্রচন্ড কবতর্কের সৃষ্টি করে দিবে।
- পৃথিবীতে তাদের মাঝে যে মধুর সম্পর্ক ছিল তা বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।
- বাতিল উপাস্যরা তাদের উপাসকদের বলবে, তোমরা তো আমাদের কথায় উপাসনা করতে না।
- আমরা কি কখনো বলেছি আমােদর উপাসনা কর?
- বাতিল উপাস্যরা তাদের উপাসকদের বলবে তোমরা না আমরা সত্যবাদী , সে বিষয়ে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট।
- হাশরের দিন প্রত্যেককে তাদের কৃতকর্মের ফিরিস্তি দেখান হবে।
- তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে প্রকৃত প্রভু আল্লাহর দিকে।
- অংশীবাদীরা যাদেরকে উপাস্য নির্ধারণ করেছিল তারা হবে ভীতসন্ত্রস্থ ।
- অনুধাবন: মুসলমানদের উচিত কুরআন পড়ে মূল কুরআনে আল্লাহ কি নির্দেশ দিয়েছেন তা অনুধাবন করতে চেষ্টা করা। কুরআন না বুঝে পড় মানুষ নানা ধরণের শেরেকী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
মূল আলোচ্য বিষয় :
(ক) আল্লাহর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। (২১)(খ) তওহীদের বর্ণনা। (২২)
(গ) কাফিরদের ভয় প্রদর্শন (২২)
(ঘ) ফসলের ক্ষেতের সাথে মানুষের জীবনের তুলনা।
(ঘ) জান্নাত ও জাহান্নামবাসী (২৬, ২৭)
(ঙ) হাশরের দিবস। (২৮,২৯,৩০)
(ক) আল্লাহর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ।(২১)
- দুঃখ-দৈন্য অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে।
- যখন আল্লাহর অনুগ্রহে বিপদ দূর হয়ে যায় তখন আল্লাহকে ভুলে যায়।
- তারা আল্লাহর সাহায্যকে অস্বীকার করে এবং অন্যান্য বিষয়কে তাদের বিপদমুক্তির কারণ হিসাবে বিবেচনা করে।
(খ) তওহীদের বর্ণনা (২২)
- মহান আল্লাহ মানুষকে স্থল ও সমুদ্র পথে ভ্রমণ করান।
- যে নৌযানসমূহে তারা ভ্রমণ করে তা আল্লাহরই সৃষ্টি।
- নৌযান চলার জন্য অনুকূল বাতাস তিনিই সৃষ্টি করেন।
- ঝড়ো বাতাস এবং ঢেউও আল্লাহর সৃষ্টি।
- তারা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়।
(গ) কাফিরদের ভয় প্রদর্শন। (২২,২৩)
- আল্লাহ কূটকৌশল অবলম্বনকারীকে দ্রুত শাস্তি দেন।
- ফেরেশতারা ব্যক্তির কূট কৌশল লিখে রাখে।
- আল্লাহ যখন তাদের বিপদমুক্ত করেন তখন তারা দেশে অন্যায় ভাবে জুলুম করে।
- মহান আল্লাহ তাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছেন , তারা যে অন্যের উপর জুলুম করছে তার প্রতিক্রিয়া এসে তাদের নিজেদের উপরে পড়বে।
- তাদেরই পাপ হবে এবং শাস্তি ভোগ করবে।
- মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
- আল্লাহ তখন তাদের ভালো করে জানিয়ে দিবেন যে সব অপকর্ম তারা করত।
(ঘ) ফসলের ক্ষেতের সাথে মানুষের জীবনের তুলনা। (২৬,২৭)
মহান আল্লাহ ফসলের ক্ষেতরে সাথে মানুষের জীবনকে তুলনা করেছেন।মহান আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। বৃষ্টির ফলে ভূমিতে নানা ধরণের ফুল, ফল ও ফসল জন্মায়। ভূমি নয়নাভিরাম শোভা ধারণ করে। মানুষ মনে করে এটা তার জন্যই হয়েছে। তারই আয়াত্তাধীন। কারো সাধ্য নেই এতে হস্তক্ষেপ করা। মহান আল্লাহ দিনে বা রাতে যখন নির্দেশ দেন তখন সেই নয়নাভিরাম বাগান ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করে দেন। দেখে মনে হয়না সেখানে কোন ফসলের ক্ষেত ছিল।
তেমনি মানুষের জীবন ।মানুষের জীবন ফসলের ক্ষেতের মত। মানব জন্মের পর বড় হয়ে ধন-সম্পদের মালিক হয়, বিবাহ করে, বাড়ি-ঘর করে, সন্তানের জন্ম দেয়। তার জীবনে পরিপূর্ণতা আসে। অহংকারী হয়ে পড়ে এবং নিজেকে ক্ষমতাবান মনে করে। অন্যের উপর জুলুম করতে শুরু করে। সে সময় আল্লাহ তার মৃত্যু দেন। তার ধন-সম্পদ সবই পড়ে থাকে। মানুষ যতক্ষণ ক্ষমতার অধিকারী থাকে সে ততক্ষণ মৃত্যুর কথা ভাবে না।
- আল্লাহ চিন্তাশীল সম্প্রদায়কে এই বিষয় চিন্তা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
- মহান আল্লাহ মানুষদেরকে শান্তি আবাস বা “দারুস সালামের” দিকে ডাকেন।
- যাকে ইচ্ছা তাকে সরল পথ বা “সীরাতুল মুস্তাকীমে’ পরিচালিত করেন।
(ঙ) জান্নাত বাসী ও জাহান্নাম বাসী (২৬,২৭)
জান্নাতবাসীদের বৈশিষ্ট্য :- যারা ভাল কাজ (আহসানুল হুসনা) করে
- তাদের জন্য আছে কল্যাণ অর্থ্যাত্ জান্নাত ও আরো অধিক কল্যাণ।
- কালিমা ও হীনতা তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছন্ন করবে না।
- স্থায়ীভাবে জান্নাতবাসী হবে।
- জান্নাতবাসীদের কোন দুঃখ বেদনা কিংবা বিষন্নতা নেই।
জাহান্নামবাসীদের বৈশিষ্ট্য:
- যারা নিকৃষ্ট কাজ করে।
- তাদের কাজের প্রতিফল নিকৃষ্টতর।
-তাদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখবে লাঞ্ছনা ।
- চেহারা দেখে মনে হবে রাতের অন্ধকার অংশ দিয়ে ঢাকা হয়েছে।
- আল্লাহ থেকে তাদের রক্ষা করার কেউ নেই।
- তারা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের অধিবাসী।
- যারা নিকৃষ্ট কাজ করে।
- তাদের কাজের প্রতিফল নিকৃষ্টতর।
-তাদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখবে লাঞ্ছনা ।
- চেহারা দেখে মনে হবে রাতের অন্ধকার অংশ দিয়ে ঢাকা হয়েছে।
- আল্লাহ থেকে তাদের রক্ষা করার কেউ নেই।
- তারা চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের অধিবাসী।
(চ) ২৮, ২৯ ও ৩০ নং আয়াতঃ হাশর দিবস।
- হাশরের দিন সব মানুষকে একত্রিত করা হবে।
- মুশরিকদের বলা হবে তাদের পূজার প্রতিমা নিয়ে দাঁড়াতে ও কৃত অপকর্ম দেখে নিতে।
- অংশবাদী মুশরিক ও বাতিল উপাস্যদের মধ্যে পৃথিবীর মধুর সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রচন্ড বিতর্কের সৃষ্টি হবে।
- বাতিল উপাস্যরা তাদের উপাসকদের তাদেরকে উপাসনার জন্য দোষারোপ করবে এবং আল্লাহকে সাক্ষী রাখবে।
- হাশরের দিন প্রত্যেককে তাদের কৃতকর্মের ফিরিস্তি দেখান হবে।
- তাদের প্রতিটি কাজ বাস্তবে কেমন ছিল হাশরের দিন তা স্পষ্ট হবে।