সূরা ইউনূস । রুকু ১। কুরআন ও নবীর সত্যতা।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন , অন্যকে বলুন
দয়াময়, পরম দয়লু আল্লাহর নামে।
সূরা ইউনূস। রুকু: ১ ।
কুরআন ও নবীর সত্যতা।
আয়াত : ১ ও ২ : কুরআন ও নবী প্রেরণের সত্যতা।
---------------------------------------------------------------------------------------
(১) আলিফ লা-ম রা । এইগুলি জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত।
---------------------------------------------------------------------------------------
মানুষের জন্য ইহা কি আশ্চর্যের বিষয় যে, আমি তাদেরই একজনের নিকট ওহী প্রেরণ করিয়াছি এই মর্মে যে, তুমি মানুষকে সতর্ক কর এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও, তাহাদের জন্য তাহাদের প্রতিপালকের নিকট আছে উচ্চ মর্যাদা! কাফিররা বলে, 'এ তো এক সুস্পষ্ট জাদুকর। '’
---------------------------------------------------------------------------------------
হরফে মুকাত্তায়াত দিয়ে শুরু হয়েছে।
এই আয়াতে কিতাবুল হাকিম অর্থ্যাত্ জ্ঞানগর্ভ কুরআনকে নির্দেশ করেছে।
আল্লাহ ২ নং আয়াতে কাফেরদের একটি সন্দেহের উত্তর তুলে ধরেছেন। তাদের ধারণা ছিল আল্লাহর কাছ থেকে যে ওহী নিয়ে আসবে সে মানু্ষ হবে না।
আল্লাহ মানুষের জন্য মানুষের মধ্য থেকে নবী নির্বাচন ও প্রেরণ করেন।
তাদের কাজ মানুষকে সতর্ক করা এবং বিশ্বাসীদের সুমংবাদ দেয়া যে তাদের জন্য প্রতিপালকের কাছে আছে "ক্বাদামা সিদকীন' বা উচ্চ মর্যাদা।
সত্য প্রত্যাখানকারীরা নবী (সঃ)কে সুস্পষ্ট যাদুকর মনে করন।
আযাত ৩: আল্লাহর গুণাবলী।
---------------------------------------------------------------------------------------
(৩) তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ' যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন। তাহার অনুমতি লাভ না করিয়া সুপারিশ করিবার কেহ নাই। ইনিই আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালক, সুতরাং তোমরা তার ইবাদত কর। তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করিবে না?
---------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ মানুষের প্রতিপালক ।
তিনি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী ৬ দিনে সৃষ্টি করেন।
আরশে সমাসীন হন। ( এর প্রকৃতি আমাদের জ্ঞানের অতীত)
তিনি সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন।অর্থ্যাত্ নিজের প্রজ্ঞানুসারে সব জিনিসের পরিচালনা করেন।
আল্লাহ এ সব গুণাবলীর অধিকারী এবং তিনি ব্যতীত আর কোন প্রতিপালক নাই।
শুধু আল্লাহর ইবাদত করবে।
এই আয়াতে আল্লাহর গুণাবলী জানার পর বুঝতে সক্ষম হবে যে আল্রাহ ছাড়া উপাস্য নাই।
আয়াত ৪: পরলোকের সত্যতা।
---------------------------------------------------------------------------------------
(৪) তাঁহারই নিকট তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন; আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। সৃষ্টিকে তিনিই প্রথমে অস্তিত্বে আনেন, অতঃপর উহার পুনরাবর্তন ঘটান,যাহারা মুমিন ও সত্কর্মপরায়ণ তাহাদের কে ন্যায়বিচারের কর্মফল প্রদানের জন্য। এবং যাহারা কাফির তাহারা কুফরী করিত বলিয়া তাহাদের জন্য রহিয়াছে অত্যুষ্ঞ পানীয় ও মর্মন্তুদ শাস্তি পানীয় ও মর্মন্তুদ শাস্তি।
---------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহর কাছে সবাই প্রত্যাবর্তন করবে।
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য।
আল্লাহ অনস্তিত্বকে অস্তিত্বে আনেন। অর্থ্যাত্ পার্থিব জীবন দান করেন।
আবার তার পুনারাবর্তন ঘটান। অর্থ্যাত্ জীবন শেষ করার পর আখেরাতে আবার জীবন দান করেন।
যারা মুমিন এবং সত্কর্মপরায়ণ তাদেের ন্যয়বিচার করে কর্মফল প্রদান করবেন।
যারা কুফরীকারী তাদের জন্য আছে অত্যুষ্ঞ পানীয় ও মর্মন্তদ শাস্তি।
আয়াত ৫ ও ৬ : আল্লাহর নিদর্শন।
---------------------------------------------------------------------------------------
(৫) তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জোতির্ময় করিয়াছেন এবং উহার মনযিল নির্দিষ্ট করিয়াছেন যাহাতে তোমরা বত্সর গণনা ও সময়ের হিসাব জানিতে পার। আল্লাহ ইহা নিরর্থখ সৃষ্টি করেন নাই।জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি এই সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বিবৃত করেন।
---------------------------------------------------------------------------------------
(৬) নিশ্চয় দিবস ও রাত্রির পরিবর্তনে এবং আল্লাহ আকাশমন্যলীও পৃথিবীতে যাহা সৃষ্টি করিয়াছেন তাহাতে নিদর্শন রহিয়াছে মুত্তাকী সম্প্রদায়ের জন্য।
---------------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ সূর্যকে করেছেন তেজস্ক্রিয়।
আর চাঁদকে করেছেন জ্যোতির্ময়।
তিনি তাদের মনযিল বা কক্ষপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
তাদের কক্ষপথে বিচরণের ফলে মানুষ বত্সর , দিন-রাত, সময় বুঝতে পারে।
তিনি এসব কোন কিছুই নিরর্থক সৃষ্টি করেন নাই।
আল্রাহর এসব নিদর্শন জ্ঞানী সম্প্রদায়েরা বুঝতে পারে।
দিবস ও রাত্রির পরিবর্তন এবং আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু তৈরী করেছেন তা মুত্তাকীদের জন্য নিদর্শন।
আয়াত ৭, ৮, ৯, ১০: পারলৌকিক জীবন।
---------------------------------------------------------------------------------------
(৭) নিশ্চয়ই যাহারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না এবং পার্থিব জীবনেই সন্তুষ্ট এবং ইহাতেই পরিতৃপ্ত থাকে এবং যাহারা আমার নিদর্শনাবলী সম্বন্ধে গাফিল।
---------------------------------------------------------------------------------------
(৮) উহাদেরই আবাস দোযখ, উহাদের কৃতকর্মের জন্য ।
--------------------------------------------------------------------------------
(৯) যাহারা মুমিন ও সত্কর্মপরায়ণ তাহাদের প্রতিপালক তাহাদের ঈমান হেতু তাহাদেরকে পথনির্দেশ করবেন; সুখদ কাননে তাহাদের পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাজিত হইবে।
------------------------------------------------------------------------------------
(১০) সেখানে তাদের ধ্বনি হইবে : "হে আল্লাহ! তুমি মহান, পবিত্র! এবং সেখানে তাহাদের অভিবাদন হইবে 'সালাম' এবং তাহাতের শেষ ধ্বনি হইবে এই: 'সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই প্রাপ্য।'
---------------------------------------------------------------------------------------
কিছু অবিশ্বাসী মানুষ আছে যারা নিশ্চিত যে তাদের আল্লাহর সম্মুখীন হতে হবে না ।
পার্থিব জীবন নিয়েই তারা সন্তুষ্ট এবং পরিতৃপ্ত।
তাদের কৃতকর্মের জন্য তারা জাহান্নামবাসী হবে।
বিশ্বাসী ও সত্কর্মপরায়ণ মানুষকে আল্লাহ পথ নির্দেশনা দেন।
তারা জান্নাতুল নাইম যার নিচ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত সেখানে স্থান পাবে।
সেখানে তাদের 'সালাম' জানিয়ে অভিবাদন করা হবে।
তাদের শেষ ধ্বনি হবে "প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর প্রাপ্য।"
ওয়া আখিরু দ'াওয়া হুম আনিল হামদু লিল্লাহি রব্বিল আ'লামীন
সংক্ষিপ্ত:
সূরা ইউনূস। রুকু: ১ ।
মূল আলোচ্য বিষয় :
1. কুরআন ও নবী প্রেরণের সত্যতা।(১,২)
2. আল্লাহর গুণাবলী। (৩)
3. পরলোকের সত্যতা। (৪)
4. মুত্তাকীদের জন্য আল্লাহর নিদর্শন।(৫,৬)
5. পারলৌকিক জীবন।(৭ হতে ১০)
1. কুরআন ও নবী প্রেরণের সত্যতা।(১,২)
প্রথম আয়াতে হরফে মুকাত্তায়াত দিয়ে শুরু জ্ঞানগর্ভ কুরআনকে নির্দেশ করেছে।
আল্লাহ ২ নং আয়াতে কাফেরদের একটি সন্দেহের উত্তর তুলে ধরেছেন। তাদের ধারণা ছিল আল্লাহর কাছ থেকে যে ওহী নিয়ে আসবে সে মানু্ষ হবে না।
আল্লাহ মানুষের জন্য মানুষের মধ্য থেকে নবী নির্বাচন ও প্রেরণ করেন।
নবীদের কাজ মানুষকে সতর্ক করা এবং বিশ্বাসীদের সুমংবাদ দেয়া যে তাদের জন্য প্রতিপালকের কাছে আছে "ক্বাদামা সিদকীন' বা উচ্চ মর্যাদা।
সত্য প্রত্যাখানকারীরা নবী (সঃ)কে সুস্পষ্ট যাদুকর মনে করন।
2. আল্লাহর গুণাবলী। (৩)
আল্লাহ মানুষের একমাত্র উপাস্ এবং শুধু তাঁরই ইবাদত করতে হবে।
তিনি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী ৬ দিনে সৃষ্টি করেন।
আরশে সমাসীন হন। ( এর প্রকৃতি আমাদের জ্ঞানের অতীত)
তিনি সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন।অর্থ্যাত্ নিজের প্রজ্ঞানুসারে সব জিনিসের পরিচালনা করেন।
আল্লাহ এ সব গুণাবলীর অধিকারী এবং তিনি ব্যতীত আর কোন প্রতিপালক নাই।
শেষাংশে আশা করা হয়েছে আল্লাহর গুণাবলী জানার পর মানুষ অনুধাবন করতে পারবে আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই।
3. পরলোকের সত্যতা। (৪)
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং তাঁর কাছে সবাই প্রত্যাবর্তন করবে।
আল্লাহ অনস্তিত্বকে অস্তিত্বে আনেন। অর্থ্যাত্ পার্থিব জীবন দান করেন।
আবার তার পুনারাবর্তন ঘটান। অর্থ্যাত্ জীবন শেষ করার পর আখেরাতে আবার জীবন দান করেন।
যারা মুমিন এবং সত্কর্মপরায়ণ তাদেের ন্যয়বিচার করে কর্মফল প্রদান করবেন।
যারা কুফরীকারী তাদের জন্য আছে অত্যুষ্ঞ পানীয় ও মর্মন্তদ শাস্তি।
4. মুত্তাকীদের জন্য আল্লাহর নিদর্শন।(৫,৬)
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে নিদর্শন
তেজস্ক্রিয় সূর্য এবং জ্যোতির্ময় চাঁদ।
তাদের নির্ধারিত কক্ষপথ।
দিন ও রাতের আবর্তন।
কক্ষপথ বিচরণকে ভিত্তি করে সময় অর্থ্যাত্ বছর,মাস, সপ্তাহ নির্ধারণ।
আল্লাহ কোন কিছুই নিরর্থক সৃষ্টি করেন না।
আল্লাহর নিদর্শন শুধু জ্ঞানী সম্প্রদায়েরা বুঝতে পারে।
5. পারলৌকিক জীবন।(৭ হতে ১০)
(i) অবিশ্বাসী মানুষ:
যারা নিশ্চিত যে তাদের আল্লাহর সম্মুখীন হতে হবে না ।
পার্থিব জীবন নিয়েই তারা সন্তুষ্ট এবং পরিতৃপ্ত।
তাদের কৃতকর্মের জন্য তারা জাহান্নামবাসী হবে।
(ii) বিশ্বাসী ও সত্কর্মপরায়ণ মানুষ::
বিশ্বাসী ও সত্কর্মপরায়ণ মানুষকে আল্লাহ পথ নির্দেশনা দেন।
তাঁরা জান্নাতুল নাইম যার নিচ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত সেখানে স্থান পাবে।
সেখানে তাদের 'সালাম' জানিয়ে অভিবাদন করা হবে।
তাদের শেষ ধ্বনি হবে "প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর প্রাপ্য।"
ওয়া আখিরু দ'াওয়া হুম আনিল হামদু লিল্লাহি রব্বিল আ'লামীন