সূরা তাওবা। রুকু ১৫ । ধর্মের জ্ঞাননুশীলন ।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময় , পরম দয়ালু আল্লাহর নামে
সূরা তাওবা , রুকু ১৫।
আয়াত ১১৯ - ১২২
ধর্মের জ্ঞাননুশীলন
১০৬ নং আয়াতে তিন সাহাবী সম্পর্কে বলা হয়েছিল যে, তাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত মুলতবী করা হয়েছে। ১১৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে নবী (সঃ) আদেশ দিয়েছিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে তাদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশ না আসে , ততক্ষণ তাদের সামাজিক ভাবে বয়কট করতে। দীর্ঘ ৫০ দিন তাদের এভাবে কাটাতে হয়। এই তিন সাহাবীর কাছ থেকে যে শিক্ষা লাভ হয় ১১৯ নং আয়াতে আল্লাহ তা তুলে ধরেছেন। এদর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে::
তারা নিজেদের দোষ গোপন করা জন্য মুনাফিকদের মত মিথ্যা অজুহাত তুলে ধরেন নি।
যা সত্য ছিল তাই অকপটে প্রকাশ করে।
তারা সত্যবাদী । তাই আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করেন।
আয়াত অনুযায়ী আলোচ্য বিষয়:
১১৮ আয়াত :আল্লাহভীরুতা ও সত্যনিষ্ঠার আদেশ।
-------------------------------------------------------------------------------------
(১১৯) হে মুমিণগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করএবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হও।
-------------------------------------------------------------------------------------
মুমিনদের প্রতি আল্লাহর আদেশ::
আল্লাহকে ভয় কর।
সত্যবাদী হও।
১২০ ও ১২১ নং আয়াত: মুজাহিদদের প্রশংসা ও জিহাদবিমুখ লোকদের তিরস্কার
-------------------------------------------------------------------------------------
(১২০) মদীনাবাসী ও উহাদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সঙ্গত নয় আল্লাহর রাসুলের সহগামী না হইয়া পিছনে রহিয়া যাওয়া এবং তাহার জীবন অপেক্ষা তাহাদের নিজেদের জীবনকে প্রিয় জ্ঞান করা; কারণ আল্লাহর পথে উহাদের তৃষ্ণা, ক্লান্তি এবং ক্ষুধায় ক্লিষ্ট হওয়া এবং কাফিরদের ক্রোধ উ দ্রক করে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং শত্রুদের নিকট হইতে কিছু প্রাপ্ত হওয়া উহাদের সত্কর্মরূপে গণ্য হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্কর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেন না।
-------------------------------------------------------------------------------------
(১২১) এবং উহারা ক্ষুদ্র অথবা বৃহত্ যাহাই ব্যয় করে এবং যে কোন প্রান্তরই অতিক্রম করে তাহা উহাদের অনুকূলে লিাপবদ্ধ হয়-যাহাতে উহারা যাহা করে আল্লাহ তাহা অপেক্ষা উত্কৃষ্টতর পুরস্কার উহাদেরকে দিতে পারেন।
-------------------------------------------------------------------------------------
তাবুক যুদ্ধে শরীক হবার জন্য মদীনা বাসী এবং সে সময় মদীনার চারপাশে যে সব গ্রামবাসী ছিল তাদের সবাইকে আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু সবাই সে আহ্বানে সাড়া দেয় নি। যারা দেয় নি তাদেরকে আল্লাহ তিরস্কার করেন।
(i) যুদ্ধে গমন না করার জন্য তিরস্কার।
রাসুল (সঃ) কে সহযোগিতা না করা শোভনীয় ছিল না।
রসুল (সঃ) এর অুগামী হওয়া উচিত ছিল।
এটা অত্যন্ত অনুচিত কাজ হয়েছে।
তারা রাসুল (সঃ) এর প্রাণ বাঁচানো নিয়ে চিন্তা করেনি।
নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল।
তাদের উচিত ছিল তাদের নিজেদের জীবনের চাইতে রাসুল (সঃ) এর সুরক্ষার দিকে নজর রাখা।
(ii) মুজাহিদদের প্রশংসা:
যুদ্ধে রাসুল (সঃ)কে সহায়তা করেছেন।
তারা নিজেদের জান বাঁচানোর চাইতে রাসুল (সঃ) এর সুরক্ষার কথা চিন্তা করেছেন।
আল্লাহর পথে চলতে গিয়ে তারা পিপাসা, ক্লান্তি ও ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করেছে।
আল্লাহর পথে চলতে গিয়ে কাফেরদের যে ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির সম্মুখীন হতে হয় তার জন্য নেকী আছে।
আল্লাহর পথে ছোট-বড় যে আমল করুক তার জন্য নেকী আছে।
১২২ নং আয়াত: দ্বীনের শিক্ষার উপর গুরুত্ব।
------------------------------------------------------------------------------
(১২২) মুমিনদের সকলের একসঙ্গে অভিযানে বাহির হওয়া সংগত নয়, উহাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন, যাহাতে তাহারা দীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলণ করিতে পারে এবং উহাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করিতে পারে, যখন তাহারা তাহাদের নিকট ফিরিয়া আসিবে যাহাতে তাহারা সতর্ক হয়।
-------------------------------------------------------------------------------------
সাধারণত নিয়ম হল ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যদি জিহােদর আহ্বান করা হয় , তবে প্রতিটি সক্ষম মুমিনের তাতে অংশগ্রহণ করা ফরজ। তাবুকের যুদ্ধে বিশেষ প্রয়োজনে সবাইকে যুদ্ধে যাবার আহবান জানানো হয়ে ছিল।সাধারণ অকস্থায় ' দায়িত্ব ও কর্ম বণ্টন নীতির' উপর ভিত্তি করে কাজ করা উচিত। এই আয়াতে দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞান অনুসন্ধানকে জিহাদের সম তুল্য বলা হয়েছে।
এই আয়াতে সাহাবীদের প্রতি এই আদেশ দেয়া হয়েছে যে , সব জিহাদ এমন নয় যে, সব সাহাবীকৈ অংশ গ্রহণ করতে হবে। বরং এক দলের শরীক হওয়াই যথেষ্ট হবে।
একদল জিহাদ করতে যাবে এবং আরেক দল সেখানে থেকে দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করবে। মুজাহিদগণ যখন ফিরে আসবে , তখন তাদেরকে দ্বীনের বিধান অবহিত করবে।