সূরা বাকারা। রুকু ৪০। প্রার্থনা ।

 কুরআন পড়ুন,বুঝে পড়ুন 

নিজে জানুন, অন্যকে বলুন। 

দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।

সূরা বাকারা। রুকু ৪০। 
আয়াত: ২৮৪ - ২৮৬।
প্রার্থনা
আলোচ্য বিষয়: 


  •    আল্লাহ সর্ বিষয়ে সর্শক্তিমান। 
                            ক.     আল্লাহ মানুষের অন্তরের গোপন ও প্রকাশ্য সব জানেন।





৮৪ নং আয়াত: আল্লাহ মানুষের অন্তরের গোপন ও প্রকাশ্য সব জানেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৮৪) আসমান ও যমীনে যাহা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহরই। তোমাদের মনে যাহা আছে, তাহা প্রকাশ কর অথবা গোপন রাখ. আল্লাহ উহার হিসাব তোমার নিকট হইতে গ্রহণ করিবেন। অতঃপর যাহাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করিবেন এবং যাহাকে খুশি শাস্তি দিবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। 
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
  •    আসমান ও যমীনে য কিছু আছে তার মালিক আল্লাহ।
  •     মানুষ অন্তরে য চিন্তা করে েএবং প্রকাশ্যে যা বলে আল্লাহ সব কিছু জানেন। 
  •    আল্লাহ প্রতিটি জিনিসের হিসাব গ্রহণ করবেন। 
  •   আল্লাহ যাকে ক্ষমা করতে চাইবেন তাকে ক্ষমা করবেন আর যাকে শাস্তি দিতে চান       তাকে  শাস্তি দিবেন।
  •   আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। 


২৮৫ নং আয়াত: বিশ্বাসীদের প্রশংসা।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(২৮৫) রাসুল, তাহার প্রতি তাহার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে

সে বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে, এবং বিশ্বাসীগণও। তাহাদের সকলে আল্লাহ, তাঁহার ফেরেশতাগণে তাঁহার কিতাবসমূহে এবং তাঁহার রাসুলগণে বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে। তাহারা বলে, ’আমরা তাহার রাসুলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না’ আর তাহারা বলে, ‘আমরা শুনিয়াছি এবং পালন করিয়াছি। হে আমা দের প্রতিপালক! আমরা তোমার ক্ষমা চাই আর প্রত্যাবর্তন তোমার নিকট।

------------------------------------------------------------------------

  •     প্রথমে রাসুল (সঃ) এর বিশ্বাস স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। 
  •     বিশ্বাসীরা  আল্লাহ, রাসুল (সঃ) এবং তাঁর উপর অবতীর্ণ  কিতাবে বিশ্বাস করেছে।
  •     এছাড়াও  তাঁরা ফেরেশতাগণ, অন্যান্য রাসুল ও তাদের কিতাবসমূহে বিশ্বাস করেছে।  
  •      বিশ্বাসীদের সবার প্রতি বিশ্বাস আছে। 
  •      ’আমরা শুনেছি ও পালন করেছি ‘ বলে  পূর্ণ  ঈমান প্রকাশ করেছেন।
  •       আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় এবং তাঁর কাছে প্রত্যবর্তন অর্থ্যাৎ আখেরাতে বিশ্বাসের কথা বলেছে।

মানুষ যে কোন সময়ে যে কোন অবস্থাতেই থাকুক না কেন  আল্লাহর কাছে প্রার্না করতে পারে। 
বরকতময় রমজান মাসের বিধিবিধানের সাথে প্রার্থনার কথা উল্লেখ করে এ কথা পরিষ্কার করা হয়েছে যে রমযান মাস  দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনার  বিশেষ  মাস। অতএব এ মাসে প্রার্থনা করার  প্রতি খুব যত্ন নেয়া উচিত। বিশেষ করে রোযা থাকা অবস্থায়। 
 
২৮৬ নং আয়াত: প্রার্থনা শিক্ষা। 
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২৮৬) আল্লাহ কাহারও উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যাহা তাহার সাধ্যাতীত। সে ভাল যাহা উপার্জন করে তার প্রতিফল তাহারই এবং সে মন্দ যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই। 'হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করিও না। হে আমাদের প্রতিপালক! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করিও না যাহা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদের ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর।  
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(ক)     প্রার্থনা কবুলের জন্য কুরআন ও হাদীসে যে শর্তাবলী আছে তা অনুসরণ করা আবশ্যক।
এই আয়াতে দুটি শর্তের কথা বলা হয়েছে।
  1.     আল্লাহর উপর দৃঢ় ঈমান রাখা।
  2. তাঁর দেয়া বিধি-বিধান মেনে চলা।
(খ) এই আয়াতে আল্লাহ বেশ কয়েকবার নিজের পবিত্রও সত্বা ও বান্দার কথা উল্লেখ করেছেন এবং সে সাথে আল্লাহ নবী (সঃ) কে তাঁর বান্দাকে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের কথা বলতে বলেছেন। উদ্দেশ্য যাতে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়।
  1. আল্লাহ বান্দাদের অতি নিকটে আছেন। 
  2.  আল্লাহ আশা করেন তাঁর বান্দা তাঁকে ডাকবে। 
  3. আল্লাহ বান্দাদের প্রার্থনা ও ও আহ্বান শোনেন। 
  4. প্রার্থনাকারীর আহ্বানে আল্লাহ তাঁর সান্নিধ্যের আশ্বাস দেন। 
  5.  প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করেন।
  6. বান্দাকে শুধু আল্লাহর কাছ চাইতে হবে এবং তাঁরই নির্দেশ পালন করবে। 
  7. আল্রাহর উপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । 
  8. আল্লাহ তাঁকে সঠিক পথে পরিচালনা  করবেন। 


আমার অনুধাবন::


  •  এই সূরাটি শুরু হয়েছে ঈমানের বৈশিষ্টের বর্ণনা দিয়ে আর শেষ করা হয়েছে ঈমান আনার অঙ্গীকার দিয়ে। 

  •  আমাদের ঈমান এবং আচরণ যদি আন্তরিক হয় তখন আমরা ভাল মুমিন হতে পারব। 

  • আমাদের বিনয়-অনুনয়ের সাথে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থী হতে হবে। আল্লাহ পরম করুণাময় এবং ক্ষমাশীল। তিনি আমাদের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন। 

  • আমাদের  জীবন পরিচালনার জন্য তাঁর অনুগ্রহ ও সাহায্য কামনা করতে হবে। 

  •  এই সূরাটি শেষ হয়েছে কাফিরদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসীদের জন্য সাহায্য কামনা করে। অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের জয়ের জন্য সাহায্য কামনা করে।

  • দোয়া হচ্ছে আল্রাহর সাথে কথপোকথন। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের একমাত্র                         ইলাহ মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে থাকি। বাস্তবে আমরা এখন দেখতে পাই আমরা 

                      পীর - মোর্শেদ এদের কাছে গিয়ে বিপদ থেকে উদ্ধারের  প্রার্থনা করি । তারা যা বলে                                  আমরা  তা শুনি। । অথচ আল্লাহর ডাক শুনি না। এই আয়াত থেকে এটা স্পষ্ট যে একমাত্র                          আল্লাহর কাছে  আমরা প্রার্থনা করব। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url