সূরা বাকারা । রুকু ২৯ । তালাক।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন , অন্যকে বলুন।
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।
সূরা বাকারা । রুকু -২৯।
আয়াত : ২২৯ - ২৩১।
তালাক।
২২৯ নং আয়াত: তালাক-ই-রাজ'ঈ' ও খোলা তালাক।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(২২৯) তালাক দুইবার। অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিমত রাখিয়া দিবে অথবা সদয়ভাবে মুক্ত করিয়া দিবে।তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে যাহা প্রদান করিয়াছ তম্মধ্য হইতে কোন কিছু গ্রহণ করা তোমাদের পক্ষে বৈধ নহে। অবশ্য যদি তাহাদের উভয়ের আশংকা হয় যে, তাহারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করিয়া চলিতে পারিবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে , তাহারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করিয়া চলিতে পারিবে না, তব স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে নিস্কৃতি পাইতে চাহিলে তাহাতে তাহাদের কারও কোন অপরাধ নাই। এইসব আল্লাহর সীমারেখা । তোমরা উহা লংঘন করিও না। যাহারা এই সীমারেখা লংঘন করে তাহারাই জালিম।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
তালাক দিতে হলে সর্বোচ্চ দুই তালাক দেয়ার নির্দেশ। (তালাক-ই-রাজ'ঈ')
এতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক পুনরুজ্জীবন করা সম্ভব।
ইচ্ছে হলে নিয়মানুযায়ী রাখবে।
ইদ্দত চলাকালে তালাক প্রত্যাহার করার অধিকার স্বামীর আছে।
ইদ্দতের পর পারস্পরিক সম্মতি ক্রমে নতুন মোহরানায় নতুনভাবে বিবাহ সম্পন্ন হতে পারে।
কিন্তু তিন তালাক দিয়ে ফেললে সে সুযোগ আর থাকে না।
তালাক দিতে হলে সদাচরণের সাথে দিতে হবে।
স্বামীর জন্য মোহরানা মাফ চাওয়া কিংবা ফেরত্ নেয়া হালাল নয়।
তালাক দেয়ার সময় মোহরানা ফেরৎ নেয়া যাবে না।
স্ত্রীর পক্ষ হতে তালাক চাওয়া হলে সেটা যদি স্বামীর পক্ষ হতে জুলুমের কারণে না হয়ম অন্য কোন কারণে হয় । যেমন স্বামী বা স্ত্রী উভয়ে আশংকা করে যে বৈবাহিক দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারছে না তখন জায়েয রাখা হয়েছে স্ত্রী আর্থিক বিনিময় হিসাবে পূর্ণ মোহরানা বা তার অংশ বিশেষ স্বামীকে ওয়াপস করবে কিংবা মাফ করে দেবে।
একে 'খুলা' তালাক বলে।
২৩০ নং আয়াত: তিন তালাকের পর বৈধকরণ।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
২৩০ নং আয়াত: অতঃপর যদি সে তাহাকে তালাক দেয় তবে সে তাহার জন্য বৈধ হইবে না, যে পর্যন্ত সে অন্য স্বামীর সঙ্গে সংগত হইবে। অতঃপর সে যদি তাহাকে তালাক দেয় আর তাহারা উভয়ে মনে করে যে, তাহারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করিতে সমর্থ হইবে, তবে তাহাদের পুনর্মিলনে কাহারও কোন অপরাধ হইবে না। এইগুলি আল্লাহর বিধান, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ ইহা স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করেন।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
তৃতীয় বিয়ে হবার পর অন্য বিয়ে না হলে ঐ ম্ত্রী হালাল হবে না।
২৩১ নং আয়াত: আল্লাহর বিধান সম্পর্কে উপহাসের নিষেধাজ্ঞা।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যখন তোমরা স্ত্রীদের তালাক দাও এবং তাহারা ইদ্দত পূর্তির নিকটবর্তী হয় তখন তোমরা হয় যথাবিধি তাহাদেরকে রাখিয়া দিবে অথবা বিধিমত মুক্ত করিয়া দিবে। কিন্তু তাহাদের ক্ষতি করিয়া সীমালংঘনের উদ্দেশ্যে তাহাদেরকে তোমরা আটকাইয়া রাখিও না। যে এইরূপ করে, সে নিজের প্রতি জুলুম করে। এবং তোমরা আল্লাহর বিধানকে ঠাট্টা -তামাশার বস্তু করিও না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত ও কিতাব এবং হিকমত যাহা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন যদ্দারা তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, তাহা স্মরণ কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে জ্ঞানময়।
—-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
এই আয়াতে বলা হয়েছে স্ত্রীকে ইদ্দতের মাঝে ফিরিয়ে নিতে পারে।
স্ত্রীকে রাখতে হলে ভালভাবে রাখবে অথবা বিদায় করে দিবে।
স্ত্রী কে কষ্ট দেয়ার জন্য আটকিয়ে রাখা জায়েয নয়।
আল্লাহর বিধান নিয়ে ঠাট্টা -তামাশা করা যাবে না।
ঠাট্টাচ্ছলেও তালাক দেয়া যাবে না।
অনুধাবন::
একই সময় দুই বা তিন তালাক দেয়া আল্লাহর হিকমতের পরিপন্থী। চিন্তা-ভাবনা করে ধীরে-সুস্থে মহান আল্লাহ সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন।
অনেক সময় মানুষ রাগান্বিত হয়ে চিন্তা-ভাবনা না করে তালাক দিয়ে বসে। এর ফলে স্বামী তার ভুল সংশোধনের সুযোগ পায়। তালাক প্রত্যাহার করে আবার পূর্বের মত স্ত্রীর সাথে সাংসারিক জীবন যাপন করতে পারে।
মহান আল্লাহ স্ত্রীর সাথে নিপীড়নমূলক ব্যবহার করা হারাম করেছেন।