সূরা বাকারা। রুকু-১৮।আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসাবে কাবা।

 কুরআন পড়ুন,  বুঝে পড়ুন

নিজে জানুন, অন্যকে বলুন। 


দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে  শুরু

সূরা বাকারা, রুকু ১৮ 

আয়াত : ১৪৮-১৫২

আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসাবে কাবা। 


আয়াত অনুযায়ী আলোচ্য বিষয়: 


১৪৮ নং আয়াত: সৎকর্মে প্রতিযোগিতা। 

—---------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৪৮) প্রত্যেকের একটি দিক রহিয়াছে, যেদিকে সে মুখ করে। অতএব তোমরা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা কর। তোমরা যেখানেই থাক না কেন আল্লাহ তোমাদের সকলকে একত্র করিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • সব মানুষেরই একটি নির্দিষ্ট দিক আছে যেদিকে সে মুখ করে এবাদত করে।

  • অতএব এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করা উচিত নয়। 

  •  আল্লাহর কাছে তারা প্রিয় যারা সৎ বান্দা। 

  • আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সৎ কাজ করা নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে হবে। এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। 

  • শেষ পরিণামের দিন আল্লাহ সব ধর্মাবলম্বীদের  একত্র করবেন। 

  • সেদিন কিবলা একটিই হবে। 

  • আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। 



১৪৯ ও ১৫০ নং আয়াত: কিবলা হিসাবে কাবা ঘরের পুনরুল্লেখ।

  —---------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৪৯) যেখান হইতেই তুমি বাহির হও না কেন মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। ইহা নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে প্রেরিত সত্য। তোমরা যাহা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ অনবহিত নহেন। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৫০) তুমি যেখান হতেই বাহির হও না কেন মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাইবে, যাহাতে তাহাদের মধ্যে জালিমদের ব্যতীত অপর লেকের তোমাদের বিরুদ্ধে বিতর্কের কিছু না থাকে। সুতরাং তাহাদেরকে ভয় করিও না, শুধু আমাকেই ভয় কর। যাহাতে আমি আমার নিয়ামত তোমাদেরকে পূর্ণরূপে দান করিতে পারি এবং যাহাতে তােমরা সৎপথে পরিচালিত হইতে পার। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • উপরের দুই আয়াতে পুনরায় কাবাঘরকে কিবলা হিসাবে উল্লেখ ও যুক্তি প্রদান করা হয়েছে। 

  • ইহদীদের উপহাসের কারণে অনেক মুসলমানের পক্ষে কিবলা পরিবর্তন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। 

  • আল্লাহ দুই আয়াতই ঘোষণা করেছেন ‘বায়তুল্লাহ’ শরীফ হচ্ছে মুসলমানতের নির্ধারিত কিবলা।

  • ভ্রাম্যমান অবস্থায় যেদিকেই থাকুক না কেন কিবলার দিকে মুখ ফিরাতে হবে। 

  • সীমালঙ্ঘনকারী ছাড়া আর কেউ এ নিয়ে বিতর্ক করবে না। 

  • সীমালঙঘনকারীদের ভয় করা যাবে না। 

  • একমাত্র আল্লাহকে ভয় করতে হবে। 

  • এ জন্য করতে হবে যেন আল্লাহ তাদেরকে পূর্ণরূপে অনুগ্রহ দিতে পারেন। ্

  • তারাও সরল পথ প্রাপ্ত হবে। 



১৫১ ও ১৫২ নং আয়াত: আল্লাহর আরো নেয়ামত। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৫১) যেমন আমি তোমাদের মধ্য হইতে তোমাদের নিকট রাসুল প্রেরণ করিয়াছি, যে আমার আয়াতসমূহ তোমাদের নিকট তেলওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়  আর তোমরা যাহা জানিতে না তাহা শিক্ষা দেয়। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৫২) সুতািং তোমরা আমাকেই স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করিব। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হইও না। 

—----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • মহান আল্লাহ মুসলমানদের আরো নেয়ামত দিয়েছেন। মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য নবী পাঠিয়েছেন। 

  • নবীরা শিক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন। 

  • আয়াত তিলওয়াত শিক্ষা দেন। 

  • উম্মতদের আল্লাহর আয়াত ও বিধান শিক্ষা দিতেন। 

  • মুসলমানদের পরিশুদ্ধ করেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। 

  • তারা যা জানতনা সে বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান দেন। 

  • আল্লাহ মানুষকে এত নেয়ামত দিয়েছেন তা স্মরণ করে কৃতজ্ঞ হতে বলেছেন। 

  • আল্লাহর কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করার অর্থ বিপথগামী হওয়া। 

  • আল্লাহ কোন অবস্থাতেই ইমান প্রত্যখ্যান করতে নিষেধ করেছেন। 



অনুধাবন:

  • আল্লাহর কাছে তারাই প্রিয় যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সৎ কাজ করে। অর্থ্যাৎ আল্লাহর নৈকট্য লাভের মানদন্ড হচ্ছে সৎকাজ। 

  •  বিনা বাক্য ব্যয়ে আল্লাহর বিধানকে মেনে নেয়া হচ্ছে ইমান আর এই বিধান অনুযায়ী আমল করা হল ইবাদত। 

  • মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব আছে। পবিত্র কুরআন এখানে মানুষ ও সমাজের কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করতে বলেছেন। শুধু তাই নয় অন্যদের পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে বলেছেন।  

  • মহান আল্লাহ আমাদের একদিন হাশরের ময়দানে একত্রিত করবেন। তাই আল্লাহর নির্দেশ মান্য করা শ্রেয়। 

  • মানুষের আত্মিক সংশোধনের জন্য শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যা যথেষ্ট নয়। সে বিদ্যাকে নিজের জীবনে প্রতিফলিত করবার জন্য বাস্তব প্রশিক্ষণও প্রয়োজন। 

  • সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, সাফল্য-ব্যর্থতা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর নাম স্মরণ করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। তবে আল্লাহ আমাদের স্মরণ করবেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url