সূরা বাকারা, রুকু -২৪। হজ্জ।

 কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন

নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।


দয়াময়. পরম  দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।

সূরা বাকারা। রুকৃ ২৪

আয়াত :১৮৯- ১৯৬

হজ্জ 


আয়াত অনুযায়ী আলোচ্য বিষয়: 

১৮৯ নং আয়াত : হজ্জে চন্দ্রের বিধান এবং এহরাম অবস্খায় গৃহে প্রবেশের পরিসংশোধন। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৮৯) লোকে তোমাকে নতুন চাঁদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে। বল, ‘উহা মানুষ এবং হজ্জের জন্য সময়-নির্দেশক।’ পশ্চাৎদিক দিয়া তোমাদের গৃহে প্রবেশ করাতে পূণ্য নাই; কিন্তু পূণ্য আছে কেহ তাকওয়া অবলম্বন করিলে। সুতরাং তোমরা দ্বার দিয়া গৃহে প্রবেশ কর, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • নতুন চাঁদ মানুষ এবং হজ্জ্বের জন্য সময় নির্দেশক। 

  • যেমন-দিন, মাস বছর গণনা, রোজার সময়, হজ্জের মাস চিহ্ণিতকরণ এই চাঁদের  হ্রাস-বৃদ্ধি দিয়ে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। 

  • তৎকালীন আরব দেশে তীর্থ যাত্রার আগে ও পরে বাড়ীর সামনের দরজা দিয়ে প্রবশ না করে পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করত। মনে করত এতে  পূণ্য আছে। 

  • এই আয়াতে এরশাদ করেছেন বাড়ীর পশ্চাৎ দিয়ে প্রবেশ করাতে কোন পূণ্য নাই। 

  • পূণ্য আছে আল্লাহকে ভয় করার মধ্যে । 

  • সফলকাম হতে হলে দুটি কাজ করতে হবে। 

  1. বাড়ীর উপযুক্ত বা সঠিক দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। 

  2. আল্লাহ ভীতি থাকতে হবে। 


১৯০, ১৯১ ও ১৯২ নং আয়াত:  কাফেরদের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহ। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৯০) যাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহর পথে তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; কিন্তু সীমালংঘন করিও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘন-কারীগণকে ভালবাসেন না। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৯১) যেখানে তাহাদেরকে পাইবে হত্যা করিবে এবং যে স্থান হইতে তাহারা তোমাদেরকে বহিষ্কার করিয়াছে তোমরাও সেই স্থান হইতে তাহাদেরকে বহিষ্কার করিবে। ফিতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর। মসজিদুল হারামের নিকট তোমরা তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ করিবে না, যে পর্যন্ত তাহারা সেখানে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না করে। যদি তাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তবে তোমরা তাহাদেরকে হত্যা করিবে, ইহাই কাফিরতের পরিণাম। 

—---------------------------------------------------------------------------------------------------------- ------------------

(১৯২) যদি তাহারা বিরত হয় তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৯৩)আর তোমরা তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে থাকিবে যাবত ফিতনা দূরীভূত না হয় এবং আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত না হয়। যদি তাহারা বিরত হয় তবে জালিমদেরকে ব্যতীত আর কাহাকেও আক্রমণ করা চলিবে না। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • আল্লাহর নামে আল্লাহর  পথে  যুদ্ধ করতে হবে। 

  • যারা যুদ্ধ করতে আসে তাদের সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। 

  • যুদ্ধ করার সীমা ঠিক করে দিয়েছেন। আর তা হল যতক্ষণ ফিতনা দূরীভূত হয়। 

  • যুদ্ধের সময় ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে যুদ্ধ করতে হবে।এই সীমা লঙ্ঘন করতে নিষেধ করেছেন। 

  • সতর্ক করে দিচ্ছেন আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীকে ভালবাসেন না। 

  • এই আয়াতসমূহের  নির্দেশ মক্কার কুরায়েশদের মুসলমানদের প্রতি আচরণের জবাবে কি করতে হবে সে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

  • তারা মুসলমানদের নিজ বাড়ী-ঘর ও শহর থেকে বের করে দিয়েছে। 

  • সমাজে ফেতনা-ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করেছে।

  • ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা হত্যার চেয়ে বড় অপরাধ। 

  • একান্ত বাধ্য না হলে মসজিদুল হারামের কাছে যুদ্ধ করতে নিষেধ করেছেন। 

  • যদি প্রতিপক্ষ যুদ্ধ করতে আসে তখন তা যে জায়গায় হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

  • তাদের হত্যা করতে বলা হয়েছে। 

  • প্রতিপক্ষ যদি যুদ্ধ থেকে বিরত হয় আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (গাফুরুর রাহীম।) 

  • জিহাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে যে পর্যন্ত ফেতানার অবসান ঘটে এবং আল্লাহর দ্বীন প্র্রতিষ্ঠা লাভ করে।

  • কেউ যদি যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে তার সাথে যুদ্ধ করা উচিত নয়। 


১৯৪ আয়াত: পবিত্র মাসে যুদ্ধের বিধান। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৯৪) পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে। যাহার পবিত্রতা অলঙ্ঘনীয় তাহার অবমাননা সকলের জন্য সমান। সুতরাং যে কেহ তোমাদেরকে আক্রমণ করিবে তোমরাও তাহাকে অনুরূপ আক্রমণ করিবে এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ য়ে, আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকীদের সঙ্গে থাকেন। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

চারটি মাসকে ইসলাম পবিত্র মাস হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে। এই মাসগুলি হল রজব, জ্বিলকদ, জ্বিলহজ্জব ও মহররম। 

  • পবিত্র চারটি মাসে ইসলাম যুদ্ধ-বিগ্রহ করতে নিষেধ করেছে। 

  • মুশরেকরা এই পবিত্র মাসের সুযোগ নিয়ে মুসলমানদের অতর্কিত আক্রমণ করত। 

  • তাই আল্লাহ মুসলমানদের পবিত্র মাস হলেও তার জবাব দিতে বলেছেন। 

  • এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করতে বলেছেন।

  • মুসলমানদের এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেও নিষেধ করেছেন। ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে আচরণ করতে হবে। 

  • সে সাথে আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন মুত্তাকীদের সাথে আল্লাহ সব সময় আছেন। 


১৯৫ নং আয়াত: আল্লাহর পথে ব্যয়। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৯৫) তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং নিজেদের হাতে নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করিও না। তোমরা সৎকাজ কর, আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণ লোকদের ভালবাসেন। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হয়েছে। 

  • এর উদ্দেশ্য হল যারা জিহাদের ময়দানে ব্যস্ত থাকে তাদের আর্থিক চাহিদা পূরণের প্রয়োজন হয়।

  • মুসলমানরা যদি জিহাদে নিজের জীবন এবং অর্থ ব্যয় না করে তবে পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।

  • তা যদি না করে তবে তারা অবশ্যই ধ্বংস হবে অর্থ্যাৎ নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের কারণ হবে। 

  • আল্লাহ সৎকাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের ভালবাসেন।  


১৯৬ নং আয়াত: হজ্জ ও ওমরাহ সংক্রান্ত আলোচনা। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

(১৯৬) তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ও উমরাহ পূর্ণ কর, কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তবে সহজলভ্য কুরবানী করিও। যে পর্যন্ত কুরবানীর পশু উহার স্থানে না পৌঁছে তোমরা মস্তক মুন্ডন করিও না। তোমাদের মধ্য্যে যদি কেহ পীড়িত হয় কিংবা মাথায় ক্লেশ থাকে তবে সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা কুরবানীর দ্বারা উহার ফিদয়া দিবে। যখন তোমরা নিরাপদ হইবে তখন তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি হজ্জের প্রাক্কালে উমরা দ্বারা লাভবান হইতে চায় সে সহজলভ্য কুরবানী করিবে। কিন্তু যদি কেহ উহা না পায় তবে তাহাকে হজ্জের সময় তিনদিন এবং গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর সাতদিন -এই পূর্ণ দশদিন সিয়াম পালন করিতে হইবে। ইহা তাহাদের জন্য, যাহাদের পরিজনবর্গ মসজিদুল হারামের বাসিন্দা নয়। আল্লাহকে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর। 

—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

  • আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরাহ করা বাধ্যতামূলক। 

  • ওমরাহ প্রাথমিক ভাবে আবিশ্যিক কাজ না  হলেও একবার তা শুরু করলে তা শেষ করা ওয়াজিব। 

  • একমাত্র আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ছাড়া ওমরাহর যাবতীয় কাজ হজ্জ্বের মত। 

  • ওমরাহ সারা বছর ধরে করা যায়। হজ্জ্বের মত কোন নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা নেই। 


  • কেউ যদি হজ্জ্ব বা ওমরাহর ইহরাম বেঁধে ফেলে হজ্জ্ব বা ওমরাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইহরাম খোলা জায়েয নয়। কেউ নিরূপায় হয়ে গেলে ভিন্ন কথা ।  

  • হজ্জে যাবার পথে বাধা পেলে যেমন- কোন শত্রু যেতে বাধা দিল বা অসুস্থ হয়ে পড়ায় যেতে অসমর্থ হলে তবে কুরবানী দিতে হবে। 

  • এ কুরবানী যতদূর নিয়্যতকারী পৌঁছেছে সেখানে দিতে হবে। 

  • এখানেই সে এহরাম মুক্ত হবে। 

  • যে কুরবানীর প্রাণী সহজে  হস্তগত হয় তা কুরবানী দিতে হবে।  

  • ইহরাম অবস্থায় মাথা কামানো জায়েয নয়। তবে অসুুস্থতা বা কষ্ট-ক্লেশের কারণে যদি কারো মাথা কামানো দরকার পড়ে তবে সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা পশু যবেহ দ্বারা ফিদায়া দিতে হবে।

  • যখন নিরাপদ হবে তখন যে কেউ ওমরাহকে হজ্জ্বের সাথে মিলিয়ে লাভবান হতে চায় সে সহজলভ্য কুরবানী করবে। 

  • কেউ যদি কুরবানীর পশু না পায় তবে হজ্জ্বের সময় তিনদিন এবং বাড়ীতে ফিরে সাত দিন - মোট দশদিন সিয়াম পালন করবে। 

  • যারা মসজিদুল হারামের বাসিন্দা তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।

  • হজ্জ্ব ও ওমরাহর বিভিন্ন বিধি বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে মনের মধ্যে আল্লাহ ভীতি সঞ্চার করা ।

  • এই আয়াত শুরু হয়েছে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ দিয়ে আর শেষ হয়েছে যে সব নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধাচরণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করে। 

  • যে ব্যক্তি জেনেশুনে বিরুদ্ধাচরণ করবে তার জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। 


  • এখানে কুরবানীর যে হুকুম বর্ণিত হয়েছে তা শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হলে 





বি.দ্র: মীকাত: হজ্জ বা ওমরাহ যাত্রী যে জায়গা থেকে কাজ শুরু করে ,সেলাই করা  পোশাক বর্জন করে, চুল কাটা, কামানো, নখ কাটাকোন পশু-পাখী শিকার করা বন্ধ হয়ে যায় সে জায়গাকে মীকাত বলে।



অনুধাবন: 

  •  কুসংস্কার মানুষের আত্মিক উন্নতিতে কোন অবদান রাখে না। আত্মিক উন্নতি করতে হলে মানুষকে চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করতে হয়। এই চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনের ভিত্তি হল আল্লাহ ভীতি। আল্লাহ ভীতি থাকলে মানুষের পক্ষে কোন অন্যায় কাজ করা সম্ভব নয়। 

  •  শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষার অধিকার সব মানুষের আছে। কুরআন এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। 

  • ইসলামের মূলনীতি হচ্ছে শত্রুদের আচরণ ও কাজের অনুরূপ শাস্তি দেয়া। 

  • আল্লাহর ঘর পবিত্র। পারতপক্ষে একান্ত বাধ্য না হলে এখানে যুদ্ধ করা নিষিদ্ধ। 

  • মুসলমানদের উপর যারা অত্যাচার ও নিপীড়ন চালায় শুধু তাদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। 

  • ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মে বিশ্বাসী এবং নিরীহ তাদের সাথে যুদ্ধ করা উচিত নয়। 

  • কেউ যদি তওবা করে সুপথে ফিরে আসে তবে আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন।  

  • শত্রুরা সুযোগ সন্ধানী। প্রতিপক্ষের দুর্বলতার সময় তাদের আক্রমণ করার জন্য ওঁত পেতে থাকে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে । তাদেকে সুযোগের অপব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। 

  • সমঝোতা বা সামাজিক চুক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণীয় যতক্ষণ প্রতিপক্ষ তা ভঙ্গ না করে। যদি প্রতিপক্ষ অপব্যবহার করে তখন তা আর গ্রহণযোগ্য থাকে না। 

  •  আমাদের সৌভাগ্য আল্লাহর সন্তষ্টির উপর নির্ভর করে। আল্লাহর পথে ব্যয় করলে সমাজের চাহিদা গ্রস্ত ব্যক্তিরাই সে সাহায্য পায়। 

  •  হজ্জ্ব ও ওমরাহ করার আগে এর নিয়মাবলী ভাল করে জেনে নিতে হবে এবং যথাযথভাবে পালন করতে হবে 

  •  মহান আল্রাহ মানুষের শক্তি ও সামর্থের মধ্যে ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন। মানুষের সামর্থের বাইরে তিনি কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। 

  •  ইসলাম বিভিন্ন পরিবেশ ও পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্ন নির্দেশ বা বিধান দিয়েছে। যারা হজ্জ্বের অনুষ্ঠানাদি পালনে অক্ষম তারা সেক্ষেত্রে সিয়াম করতে পারেনঅথবা সাদাকা করতে পারেন।  


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url