সূরা আনফাল । রুকু -৯। যুদ্ধের নিয়ম-নীতি।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু।
সূরা আনফাল । রুকু ৯
আয়াত ৬৫-৬৯।
যুদ্ধের নিয়ম-নীতি।
প্রধান আলোচ্য বিষয়
ক. যুদ্ধের জন্য উদ্বদ্ধ করা। খ. যুদ্ধে সবর ও দৃঢ়তা। গ. যুদ্ধ বন্দীদের সাথে আচরণ। ঘ. আল্লাহর নির্দেশ অমান্যকারীর প্রতি শাস্তি। ঙ. আল্লাহ ভীতি।
আয়াত অনুযায়ী আলোচ্য বিষয়
এর আগের রুকুতে মহান আল্লাহ নবী সেঃ) ও তাঁর অনুসারীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন অবিশ্বাসীরা যদি শান্তি স্থাপনে আগ্রহী হয় এবং প্রস্তাব পাঠায় তা গ্রহণ করার জন্য। মহান আল্লাহ যেহেতু তাদের সাহায্য করবেন তাই এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করলেন।
৬৫ নং আয়াত : যুদ্ধের জন্য উদ্বদ্ধ করা।
—----------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৫) হে নবী! মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ কর; তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুই শত জনের উপর বিজয়ী হবে এবং তোমাদের মধ্যে একশত জন থাকলে এক সহস্র কাফিরদের উপর বিজয়ী হবে। কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায়, যার বোধশক্তি নাই।
—--------------------------------------------------------------------------------------------------------
হযরত মুহাম্মদ (সঃ)কে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বিশ্বাসীদের সত্য ও ন্যয়ের যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করতে বলছেন।
ধৈর্যশীল মুসলিম ও কাফের এর অনুপাত হচ্ছে ২:২০। কাফেররা ১০ গুণ হলেও যুদ্ধ করতে হবে।
’তাদের বোধশক্তি নেই’ - যারা সত্য ও ন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের বোধশক্তি নেই।
এই আয়াতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে মুসলমানদের সংখ্যা ১০ ভাগের ১ ভাগ হলেও কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। অন্যভাবে বললে বলা যায় কাফেররা যদি ১০ গুণ হয় তবুও যুদ্ধ করতে হবে।
৬৬ নং আয়াত : যুদ্ধে সবর ও দৃঢ়তা।
—----------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৬) আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে; সুতরাং তোমাদের মধ্যে এক শত জন ধৈর্যশীল থাকিলে তারা দুই শত জনের উপর বিজয়ী হবে আর তোমাদের মধ্যে এক সহস্র থাকলে আল্লাহর অনুজ্ঞাক্রমে তারা দুই সহস্রের উপর বিজয়ী হবে। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
—--------------------------------------------------------------------------------------------------------
বদরের যুদ্ধের সময় মুসলমানরা শুধু জনবল নয়, সমরাস্ত্র বিষয়েও দুর্বল ছিল।
আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের দুর্বলতার কথা জানেন বলে তাদের ভার লাঘব করেন এই আয়াতে।
১০০ জন ধৈর্যশীল থাকলে ২০০ জন কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করতে নির্দেশ দেন।
১০০০ হাজার মুসলিম সেনা থাকলে ২০০০ কাফেরে সৈন্যর উপর বিজয়ী হবে। অর্থ্যাৎ দ্বিগুণ শক্তি সম্পন্ন সৈন্যর সাথে যুদ্ধ করলে আল্লাহ তাদের বিজয়ী করবেন।
অর্থ্যাৎ একজন মুসলিম সেনাকে মোকাবিলা করতে হয় দুইজন শত্রু সেনার।
আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
৬৭ নং আয়াত: যুদ্ধ বন্দীদের সাথে আচরণ।
—-----------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৭) দেশে ব্যাপকভাবে শত্রুকে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী রাখা কোন নবীর জন্য সংগত নয়। তোমরা কামনা কর পার্থিব সম্পদ এবং আল্লাহ চান পরলোকের কল্যাণ; আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (আযিযুল হাকীম)
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
দেশে শত্রু সম্পূর্ণ ভাবে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী করে রাখা ঠিক নয়।
মানুষের পার্থিব সম্পদ আহরণের দিকে আকর্ষণ বেশী।
কিন্তু আল্লাহ মানুষের পরকালের কল্যাণ চান।
আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময। তিনি আপন প্রজ্ঞার আলোকে মুসলমানদের বিজয় দান করেন।
৬৮ নং আয়াত: আল্লাহর নির্দেশ অমান্যকারীর প্রতি শাস্তি।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৮) আল্লাহ পূর্ববিধান না থাকলে তোমরা যা গ্রহণ করেছ তজ্জন্য তোমাদের উপর মহাশাস্তি আপতিত হত।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সুস্পষ্ট নির্দেশ পাওয়ার আগে কেউ ভুল করলে আল্লাহ তার জন্য কাউকে শাস্তি দেন না।
বদরের যুদ্ধের আগে যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ কোন নির্দেশনা দেন নি।
সেজন্য যুদ্ধ চলাকালে বন্দী গ্রহণের অপরাধ ক্ষমা করা হয়।
এই বিধান
৬৯ নং আয়াত: আল্লাহ ভীতি।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৬৯) যুদ্ধে যা তোমরা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম বলে ভোগ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (গাফুরুর রাহীম)
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ হালাল। মানুষ তা ভোগ করতে পারে।
আল্লাহবক সব সময় ভয় করতে হবে।
মনে রাখতে হবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
আমার অনুধাবন:
যুদ্ধ জয়ের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে নৈতিক মনোবল। জনবল বা অস্ত্র বল নয়। যার নৈতিক মনোবল আছে সে বিপক্ষ দলের সেনাধিক্য দেখে ভয় পায় না।
ইসলামের ইতিহাসের দিকে তাকালে ৬৫ নং আয়াতের দৃষ্টান্ত দেখা যায়। কারণ যখনই মুমিণগণ ন্যায় ও সত্যর উপর ভিত্তি করে খাঁটি নিয়তে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেরছে তখন তাঁরাই জিতেছে। যদিও তাদের লোকবল, অস্ত্রবল অনেক কম ছিল। যেমন বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের সংখ্যা ৩১৩ জন আর শত্রু সেনা ১০০০ জন। ওহুদ যুদ্ধে মুসলমান ৭০০ আর শত্রু সংখ্যা ৩০০০। খন্দক যুদ্ধে মুসলমান ৩০০০ আর শত্রু সংখ্যা ১০ হাজার। তাবুক যুদ্ধে ১০ হাজার ঈমানদার মুসলিম আর তার বিপরীতে ১ লক্ষ শত্রু সংখ্যা।
এই আয়াত দ্বারা আল্লাহ যে মেসেজ দিচ্ছেন তা হল- ঈমান ও দৃঢ়তা নিয়ে সত্যর পথে যুদ্ধ করলে লোকবল কোন ব্যাপার নয়। মহান আল্রাহ তাদের সাহায্য করেন।
শত্রু সৈন্য সংখ্যা কম- বেশী যাই হোক না কেন যুদ্ধ করতে হবে ধৈর্যশীলতার সাথে। তবে কাংখিত বিজয় আসবে।
যুদ্ধের সময় মনে রাখতে হবে পরকালের সম্পদের তুলনায় পার্থিব সম্পদ অত্যন্ত নগণ্য। তাই গণিমতের মাল সংগ্রহ ও প্রতিপক্ষকে বন্দী করার চেষ্টা না করে চূড়ান্ত বিজয়ের চেষ্টা করতে হবে।
পার্থিব কল্যাণের চেয়ে পরকালের কল্যাণের প্রতি নজর দিতে হবে।
মহান আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে যে নব বিধান দিয়েছেন তা লংঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিধান আসার পূর্বে মানুষ যে অপরাধ করেছে তা মহান আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।
যুদ্ধের নিয়ম-নীতি।
হযরত মুহাম্মদ (সঃ)কে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বিশ্বাসীদের সত্য ও ন্যয়ের যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করতে বলছেন।
ধৈর্যশীল মুসলিম ও কাফের এর অনুপাত হচ্ছে ২:২০। কাফেররা ১০ গুণ হলেও যুদ্ধ করতে হবে।
’তাদের বোধশক্তি নেই’ - যারা সত্য ও ন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের বোধশক্তি নেই।
এই আয়াতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে মুসলমানদের সংখ্যা ১০ ভাগের ১ ভাগ হলেও কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। অন্যভাবে বললে বলা যায় কাফেররা যদি ১০ গুণ হয় তবুও যুদ্ধ করতে হবে।
বদরের যুদ্ধের সময় মুসলমানরা শুধু জনবল নয়, সমরাস্ত্র বিষয়েও দুর্বল ছিল।
আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের দুর্বলতার কথা জানেন বলে তাদের ভার লাঘব করেন এই আয়াতে।
১০০ জন ধৈর্যশীল থাকলে ২০০ জন কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করতে নির্দেশ দেন।
১০০০ হাজার মুসলিম সেনা থাকলে ২০০০ কাফেরে সৈন্যর উপর বিজয়ী হবে। অর্থ্যাৎ দ্বিগুণ শক্তি সম্পন্ন সৈন্যর সাথে যুদ্ধ করলে আল্লাহ তাদের বিজয়ী করবেন।
অর্থ্যাৎ একজন মুসলিম সেনাকে মোকাবিলা করতে হয় দুইজন শত্রু সেনার।
আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
দেশে শত্রু সম্পূর্ণ ভাবে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী করে রাখা ঠিক নয়।
মানুষের পার্থিব সম্পদ আহরণের দিকে আকর্ষণ বেশী।
কিন্তু আল্লাহ মানুষের পরকালের কল্যাণ চান।
আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময। তিনি আপন প্রজ্ঞার আলোকে মুসলমানদের বিজয় দান করেন।
সুস্পষ্ট নির্দেশ পাওয়ার আগে কেউ ভুল করলে আল্লাহ তার জন্য কাউকে শাস্তি দেন না।
বদরের যুদ্ধের আগে যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ কোন নির্দেশনা দেন নি।
সেজন্য যুদ্ধ চলাকালে বন্দী গ্রহণের অপরাধ ক্ষমা করা হয়।
এই বিধান
যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ হালাল। মানুষ তা ভোগ করতে পারে।
আল্লাহবক সব সময় ভয় করতে হবে।
মনে রাখতে হবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
যুদ্ধ জয়ের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে নৈতিক মনোবল। জনবল বা অস্ত্র বল নয়। যার নৈতিক মনোবল আছে সে বিপক্ষ দলের সেনাধিক্য দেখে ভয় পায় না।
ইসলামের ইতিহাসের দিকে তাকালে ৬৫ নং আয়াতের দৃষ্টান্ত দেখা যায়। কারণ যখনই মুমিণগণ ন্যায় ও সত্যর উপর ভিত্তি করে খাঁটি নিয়তে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেরছে তখন তাঁরাই জিতেছে। যদিও তাদের লোকবল, অস্ত্রবল অনেক কম ছিল। যেমন বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের সংখ্যা ৩১৩ জন আর শত্রু সেনা ১০০০ জন। ওহুদ যুদ্ধে মুসলমান ৭০০ আর শত্রু সংখ্যা ৩০০০। খন্দক যুদ্ধে মুসলমান ৩০০০ আর শত্রু সংখ্যা ১০ হাজার। তাবুক যুদ্ধে ১০ হাজার ঈমানদার মুসলিম আর তার বিপরীতে ১ লক্ষ শত্রু সংখ্যা।
এই আয়াত দ্বারা আল্লাহ যে মেসেজ দিচ্ছেন তা হল- ঈমান ও দৃঢ়তা নিয়ে সত্যর পথে যুদ্ধ করলে লোকবল কোন ব্যাপার নয়। মহান আল্রাহ তাদের সাহায্য করেন।
শত্রু সৈন্য সংখ্যা কম- বেশী যাই হোক না কেন যুদ্ধ করতে হবে ধৈর্যশীলতার সাথে। তবে কাংখিত বিজয় আসবে।
যুদ্ধের সময় মনে রাখতে হবে পরকালের সম্পদের তুলনায় পার্থিব সম্পদ অত্যন্ত নগণ্য। তাই গণিমতের মাল সংগ্রহ ও প্রতিপক্ষকে বন্দী করার চেষ্টা না করে চূড়ান্ত বিজয়ের চেষ্টা করতে হবে।
পার্থিব কল্যাণের চেয়ে পরকালের কল্যাণের প্রতি নজর দিতে হবে।
মহান আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে যে নব বিধান দিয়েছেন তা লংঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিধান আসার পূর্বে মানুষ যে অপরাধ করেছে তা মহান আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।