সূরা আনফাল। রুকু-৬।
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুন
নিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
সূরা আনফাল। রুকু ৬ আয়াত: ৪৫ - ৪৮। যুদ্ধে সফলতার মূল নীতি।
আয়াত অনুযায়ী আলোচিত বিষয়:
৪৫ ও ৪৬ ন আয়াত : মুসলমানদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৪৫) হে মুমিনগণ! তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হইবে তখন অবিচল থাকিবে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করিবে, যাহাতে তোমরা সফল হও।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৪৬) তোমরা আল্লাহ ও তাঁহার রাসুলের আনুগত্য করিবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করিবে না; করিলে তোমরা সাহস হারাইবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হইবে। তোমরা ধৈর্য ধারণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।”
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যুদ্ধের মোকাবিলায় অবিচল থাকতে হবে।
আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করতে হবে।
তাহলে সফলতা লাভ করা যাবে।
আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ মেনে চলা।
পরস্পরের মধ্যে বিবাদ করা যাবে না।
যদি করে তবে সাহস হারাবে।
যা শক্তিহীনতার কারণ হয়।
ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।
আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাহায্যকারী।
৪৭ নং আয়াত: মক্কার কাফেরদের বৈশিষ্ট্য:।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৪৭) তোমরা তাহাদের ন্যায় হইও না যাহারা দম্ভভরে ও লোক দেখাইবার জন্য স্বীয় গৃহ হইতে বাহির হইয়াছিল এবং লোককে আল্লাহর পথ হইতে নিবৃত্ত করে। তাহারা যাহা করে আল্লাহ তাহা পরিবেষ্টন করিয়া রহিয়াছেন।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
কাফেররা অতি দম্ভভরে এবং অহংকারী ভাবে চলাফেরা করত।
তারা লোকদের আল্লাহর পথ হতে বিরত রাখার চেষ্টা করে।
তাদের সমস্ত কাজ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে আছে।
৪৮ নং আয়াত: খারাপ নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
(৪৮ ) স্মরণ কর, শয়তান যখন তাহাদের কার্যাবলী তাহাদের দৃষ্টিতে শোভন করিয়াছিল এবং বলিয়াছিল, ‘আজ মানুষের মধ্যে কেহই তোমাদের উপর বিজয়ী হইবে না, আমি তোমাদের পাশেই থাকিব;’ অতঃপর দুই দল যখন পরস্পরের সম্মুখীন হইল তখন সে পিছনে সরিয়া পড়িল ও বলিল, ‘তোমাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক রহিল না, তোমরা যাহা দেখিতে পাও না্ আমি তো তাহা দেখি, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহকে ভয় করি, ‘আর আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
শয়তান কোরেশদের চোখে তাদের খারাপ কার্যাবলীকেও শোভন করে দেখিয়েছে।
তাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছিল কোন মানুষ তাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না বলে।
সে তাদের পাশে থাকার আশ্বস দেয়।
কিন্তু যখন পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখে তখন সেখান হকত সরিয়া পড়ে।
কাফেরদের ফেলে সরে পড়ে।
বলে সেও আল্লাহকে ভয় করে।
সে দাবী করে কাফেররা যা দেখে না সে তা দেখে ।
আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর।
আমার অনুধাবন:
৪৫ ও ৪৬ নং আয়াত হতে আমার অনুধাবন এই ২ আয়াতে মুসলমানদের যে চারিত্রিক গুণাাবলীর কথা বলা হয়েছে তা যদি মুসলমানরা ধারণ করে তবে মুসলমানরা বিজয় লাভ করতে পারে। এটা বর্তমান যুগেও প্রযোজ্য। আজকাল দেখা যায় মুসলমানরা আল্লাহ ও রাসুল (সঃ) এর বিরোধীদের বিরোধীতা না করে ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’ নীতির অনুসারী। যে কোন বিপদ-আপদ ঈমানের দৃঢ়তা নিয়ে সত্য পথে অবিচল থেকে মোকাবিলা করতে পারলে বিজয় অবশ্যই আসবে।
বর্তমানে মুসলমানদের দিকে তাকালে দেখা যায় তাদের মধ্যে এত মতভেদ এবং বিবাদ যার ফলে তারা শক্তিহীন এবং দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই পারস্পরিক বিবাদ থেকে মুক্তি পেতে হলে আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য ও দ্বীনের অনুসরণ করতে হবে।
বদরের যুদ্ধের সময় কাফেরদের যে আচরণ থেকে আমার অনুধাবন: গর্ব, অহংকার, লোক দেখানো আচরণের পরিণতি খারাপ হয়। সে সাথে যারা আল্লাহর আইনকে অস্বীকার করে এবং অন্যকেও প্ররোচিত করে, তারা একসময় না একসময় ধ্বংস হবেই।
শয়তান সব সময় সব ধরণের অবৈধ কাজকে সুন্দর করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে। যে সব নেতারা শয়তানের প্ররোচনায় নিজেদের পরিচালিত করে তাদের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পরাজয় হতে দেখে তখন সে তার অনুসারীদের প্রতি দায়িত্ব অস্বীকার করে। আমাদের এই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে সাবধান থাকতে হবে।