সূরা বাকারা , রুকু: ১
কুরআন পড়ুন, বুঝে পড়ুননিজে জানুন, অন্যকে বলুন।
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
আয়াত ১-৭।
মোত্তাকী ও কাফেরদের বৈশিষ্ট
র্সক্ষিপ্ত পরিচিতি
সূরাটি মাদানী। আয়াত ২৮৬ । রুকু - ৪০।
নামকরণ: এই সূরার ৬৭ - ৭৩ আয়াতে একটি গাভীর বর্ণনা করা হয়েছে। এই গাভিটী যবেহ করার জন্য বনী-ঈসরাঈলীদের আদেশ করা হয়।
কুরআনের দীর্ঘতম সূরা এটি।
সূরা ফাতিহাতে মহান আল্লাহর কাছে হিদায়েতের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছিল । মহান আল্লাহ সূরা বাকারা নাযিল করেন এবং শুরুতে বলে দেন - 'এই সেই কিতাব। এক অনুসরণ কর।'
আয়াত অনুযায়ী আলোচ্য বিষয়:
১ ও ২ নং আয়াত: হিদায়েতকারী বই।________________________________________________________
১. আলিফ, লা—ম—মীম।
২. ইহা সেই কিতাব; ইহাতে কোন সন্দেহ নাই , মুত্তাকীদের জন্য ইহা পথ-নির্দেশ,
____________________________________________________________________________
১ নং আয়াত : হরফে মুকাত্তাআত বা বিচ্ছিন্ন হরফ।
এর প্রকৃত অর্থ ও মর্ম একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। এই বিচ্ছিন্ন হরফ নিয়ে গবেষণা বা চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কারণ এর অর্থ বোঝার সাথে আকীদা বা আমলের কোন মাসআলা নির্ভর নয়। সুতরাং এ নিয়ে যুক্তি-তর্কের কোন প্রয়োজন নেই।
২য় আয়াত: কুরআনুল করীম নিঃসন্দেহে আল্লাহর বাণী ।
- মনে কোন সন্দেহ না রেখে পবিত্র কুরআনকে বিশ্বাস করতে হবে।
- আল্লাহর কাছ থেকে অবতীর্ণ ।
- আল-কুরআনের হেদায়েত সব মানুষের জন্য।
- আল্লাহভীরু লোকদের পথ প্রদর্শনকারী।
- হেদায়েত শুধু তারাই লাভ করে যারা এর প্রতি বিশ্বাস রেখে এর বিধি-বিধান ও শিক্ষা অনুসরণ করে।
বি.দ্র: 'তাকওয়া' এই আরবী শব্দটির অর্থ আল্লাহ ভীতি। এর মূল ভাব হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ভালবাসা। শাব্দিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা। ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আল্লাহর আদেশকে মেনে চলবে এবং যা থেকে আল্লাহ বিরত থাকতে বলেছেন তা পরিহার করে নিজেকে গুনাহমুক্ত রাখবে।
৩ ও ৪ নং আয়াত: মুত্তাকী বা নেক বান্দাদের পরিচয়।
____________________________________________________________________________
(৩) যারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,
(৪) এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখেরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,
____________________________________________________________________________
মুত্তকীদের ৫টি বৈশিষ্ট্যর কথা বলা হয়েছে
- যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে। আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করতে হবে। এছাড়া কতগুলি বিষয় বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে যা দেখা যায় না। যেমন: নবী-রাসুল, আসমানী কিতাব, ফেরেশতা, বেহেশত, দোযখ. বিচার দিবস, আখেরাত, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান।
- সালাত কায়েম করে।
- আল্লাহর দেয়া রিযিক বা জীবন উপকরণ থেকে ব্যয় করে।
- পূর্ববর্তী ও বর্তমানে অবতীর্ণ কিতাব সমূহে বিশ্বাস করে।
- মৃত্যু থেকে আবার পুনরুত্থান তথা আখেরাতকে বিশ্বাস করে।
বি.দ্র: আখেরাত বলতে বোঝায় মৃত্যুর পর চিরস্থায়ী জীবন। প্রত্যেক মানুষকে তার পার্থিব জীবনে কৃত প্রতিটি জিনিসের হিসাব দিতে হবে এবং তারই ভিত্তিতে সে জাহান্নামে না জান্নাতে যাবে তার ফায়সালা হবে। আখেরাতে বিশ্বাস মানুষের চিন্তা-চেতনা ও কর্মজীবনকে সরল ও সঠিক পথে পরিচালিত করে। যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে একদিন আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে তার সব কাজ-কর্মের হিসাব দিতে হবে, সে কখনো গুনাহর কাজ করতে পারে না।
৫ নং আয়াত: সফলতা লাভ।
____________________________________________________________________________
(৫) তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক নির্দেশিত পথে রহিয়াছে তাহারাই যথার্থ সফলকাম।
____________________________________________________________________________
সফলতা লাভের উপায়:
- যারা মুত্তাকীদের উপরোক্ত পাঁচটি গুণের অধিকারী হবে তারাই সফলকাম হবে।
- সফলকাম হওয়ার অর্থ আল্লাহর নেয়ামতের অধিকারী হওয়া।
৬ নং আয়াত: কাফিরদের পরিচয়।
____________________________________________________________________________
(৬) যাহারা কুফরী করিয়াছে তুমি তাহাদেরকে সতর্ক কর বা না কর, তাহাদের পক্ষে উভয়েই সমান; তাহারা ঈমান আনবে না।
____________________________________________________________________________
- কাফের হয়েছে তারা যারা কুরআন ও দ্বীন ইসলামকে মুখে ও অন্তরে স্বীকার করে না।
- এরা কুফরের উপর গোঁ ধরে বসে থাকে ।
- তারা ঠিক করে রেখেছিল যত স্পষ্ট দলীল ও উজ্জল নিদর্শন দেখানো হোক না কেন তারা নবী (সঃ) এর দাওয়াতে ঈমান আনবে না।
- তাদের জিদ ও হঠকারিতা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
- নবী-রাসুলরা তাদের দুষ্কর্মের শাস্তি নিয়ে যতই ভয় দেখান না কেন তারা বিশ্বাস করে না।
- অর্থ্যাত্ তারা বিচার দিবস ও আখেরাতে বিশ্বাস করে না।
৭ নং আয়াত: কাফেরদের ইমান না আনার কারণ।
____________________________________________________________________________
(৭) আল্লাহ তাহাদের হৃদয় ও কর্ণ মোহর মেরে দিয়াছেন, তাহাদের চক্ষুর উপর আবরণ রহিয়াছে এবং তাহাদের জন্য রহিয়াছে মহাশাস্তি।
____________________________________________________________________________
- ক্রমাগতভাবে কুফরী ও পাপ কাজ করার জন্য তারা সত্য গ্রহণে যোগ্যতা হারায়।
- 'কান' সত্য কথা শোনা থেকে বিরত থাকে।
- তাদের 'চোখ' এই বিশ্ব জগতে ছড়িয়ে থাকা আল্লাহর নিদর্শন দেখতে পায় না।
- ভুল কাজে জিদ করে যদি সিদ্ধান্ত নেয় , কোন অবস্থাতেই তা ছাড়বে না এবং সঠিক কাজ করবে না, তখন তার সঠিক কাজ করার ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়।
- পাপাচারের কারণে তাদের অন্তকরণে কুরআনের ভাষায় 'খতম' যার অর্থ আল্লাহ মোহর মেরে দেন।
- অন্তরে মোহর মারা হল তার জিদের পরিণতি।
- সত্য না মানার ফল।
- তাদের জন্য মহা শাস্তি আছে।
বি.দ্র. 'খতম' আরবী শব্দ। এর অর্থ কোন বস্তুকে এমনভাবে বেঁধে দেয়া , যার ফলে কোন কিছু ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না আবার বেরও হতে পারেনা। বাংলায় এ অবস্থাকে মোহর মারা বলা হচ্ছে।
আমার অনুধাবন:
- মুকাত্তাআত হরফ নিয়ে যুক্তি তর্ক করা যাবে না।
- কোন রকম সন্দেহ না করে পবিত্র কুরআনের উপর বিশ্বাস করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে কুরআন মানুষের জীবনের পথ নির্দেশক।
- প্রতিদিন কুরআন পাঠ করে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা নিদর্শন নিতে হবে।
- আল্লাহকে ভয় করতে হবে ভালবেসে।
- কুরআনে উল্লেখিত গায়েবী বিষয় যা ইন্দ্রিয় শক্তি বা বুদ্ধি দ্বারা সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা যায় না তাতে বিশ্বাস করতে হবে।
- সালাত কায়েম করতে হবে।
- নিজের অর্থ-সম্পদ থেকে আল্লাহর নির্দেশিত রাস্তায় করতে হবে।
- যত আসমানী কিতাব আছে তাতে বিশ্বাস করতে হবে।
- আল্লাহর আদেশ নির্দেশের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে।
- জিদ ও হঠকারিতা অত্যন্ত খারাপ জিনিস। তাই সে পথ অবলম্বন করা যাবে না।
- কোন বিষয় নিয়ে জিদ তরার আগে বিষয়টিকে পর্যলোচনা করে নিতে হবে।
- মৃত্যুর পর পুনরুত্থান ও আখেরাতের জীবনে বিশ্বাস করতে হবে।
- আল্লাহ মুমিনদের যে গুণাবলীর কথা বলেছেন তা অনুসরণ করার চেষ্টা করতে হবে।
- কাফিরদের চরিত্র কখনো অনুসরণ যোগ্য হবে না।
—— *——
- মুকাত্তাআত হরফ নিয়ে যুক্তি তর্ক করা যাবে না।
- কোন রকম সন্দেহ না করে পবিত্র কুরআনের উপর বিশ্বাস করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে কুরআন মানুষের জীবনের পথ নির্দেশক।
- প্রতিদিন কুরআন পাঠ করে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা নিদর্শন নিতে হবে।
- আল্লাহকে ভয় করতে হবে ভালবেসে।
- কুরআনে উল্লেখিত গায়েবী বিষয় যা ইন্দ্রিয় শক্তি বা বুদ্ধি দ্বারা সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা যায় না তাতে বিশ্বাস করতে হবে।
- সালাত কায়েম করতে হবে।
- নিজের অর্থ-সম্পদ থেকে আল্লাহর নির্দেশিত রাস্তায় করতে হবে।
- যত আসমানী কিতাব আছে তাতে বিশ্বাস করতে হবে।
- আল্লাহর আদেশ নির্দেশের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে।
- জিদ ও হঠকারিতা অত্যন্ত খারাপ জিনিস। তাই সে পথ অবলম্বন করা যাবে না।
- কোন বিষয় নিয়ে জিদ তরার আগে বিষয়টিকে পর্যলোচনা করে নিতে হবে।
- মৃত্যুর পর পুনরুত্থান ও আখেরাতের জীবনে বিশ্বাস করতে হবে।
- আল্লাহ মুমিনদের যে গুণাবলীর কথা বলেছেন তা অনুসরণ করার চেষ্টা করতে হবে।
- কাফিরদের চরিত্র কখনো অনুসরণ যোগ্য হবে না।
—— *——